চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

শিক্ষাঙ্গন যেন আবারও অশান্ত না হয়

চাঁজাবাজির অভিযোগে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অপসারণ, জাহাঙ্গীরনগর এবং গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা ধরনের আন্দোলনের পর বেশ কিছুদিন শান্ত ছিল দেশের শিক্ষাঙ্গন। গত কয়েকদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবারও অশান্ত হয়ে উঠেছে। এমন প্রেক্ষাপটে রাজশাহীসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এর রেশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। ওই মিছিল ও সমাবেশ থেকে ভিসি, প্রক্টরের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবি এবং আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীসহ সাবেক শিক্ষার্থীরাও ওই বিক্ষোভ সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অশান্ত হওয়ার পেছনে রয়েছে ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’ নামের নতুন একটি সংগঠনের হামলার ঘটনা। ভিপি নুর ও হামলার শিকার শিক্ষার্থীরা বলছেন: ‘রোববার এ সংগঠন ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ডাকসু ভিপি এবং তার সহযোগীদের ওপর হামলা চালায়।’ যদিও ছাত্রলীগ বলছে, মারামারির বিষয়টি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ আর ভিপি নুরদের মধ্যকার বিষয়। সেখানে ঢাবি ছাত্রলীগ জড়িত নয়।

অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ যাই হোক না কেন, ডাকসু ভিপির অফিসে হামলা ভাঙচুর হয়েছে এটাই দুঃখজনক সত্য। ভিপি নুরদের সংগঠন ‌‘সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ’ এর অনেক নেতাকর্মী হামলার শিকার হয়েছেন। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনা দুঃখজনক।

তবে এ ঘটনায় সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলও যে উদ্বিগ্ন তা ইতোমধ্যে লক্ষ্য করা গেছে। রোববার রাতেই আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম আহতদের দেখতে গিয়ে হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছেন। সোমবার সকালে এ বিষয়ে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা ও উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ। শেষ পর্যন্ত হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দায়িত্বশীলদের এমন বক্তব্য ইতিবাচক বলেই আমরা মনে করি।

আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ পর্যায়ের এমন মনোভাবের প্রতিফলন আমরা দেখেছি। হামলার ঘটনায় ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’ এর সাধারণ সম্পাদক আল মামুন এবং ইয়াসির আরাফাতকে ইতোমধ্যে আটক করা হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে হামলার সঙ্গে জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।

কথিত এসব সংগঠনের ব্যানারে উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় নেতাকর্মীর কারণে আবারও শিক্ষাঙ্গন অশান্ত হবে বলে আমরা শঙ্কিত। এখনই তাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ না করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে, যা কখনোই কাম্য নয়। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ডাকসুর সর্বোচ্চ নেতৃবৃন্দকে বিতর্কিত কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে দূরে রেখে শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করে যেতে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।