আসাদুজ্জামান বাবুল, গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে হয়রানি ও অপচেষ্টার লিখিত অভিযোগ করেছেন দুই ছাত্রী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক মো. আক্কাস আলীর বিরুদ্ধে তারা এই অভিযোগ এনেছেন।
ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করে ওই দুই ছাত্রী উপাচার্য ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনের কাছে লিখিত অভিযোগে বলেছেন, ‘সিএসই বিভাগের শিক্ষানীতি অনুযায়ী প্রতি ব্যাচকে চতুর্থ বর্ষে থিসিস করতে হয়। সে অনুযায়ী সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান মো. আক্কাস আলী আমাদের সুপারভাইজার হিসেবে নিয়োগ পান। তার তত্ত্বাবধানে আমরা তিন ছাত্রী মিলে একটি গ্রুপ করে কাজ শুরু করি।
আমাদের চতুর্থ বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টার লিখিত পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর থেকে স্যার নিজ থেকেই আমাদের প্রায় প্রতিদিন ডেকে পাঠাতেন। স্যারের কথা অনুযায়ী আমরা প্রতিদিন যথা সময়ে বিভাগে উপস্থিত হতাম। এমনকি ডিপার্টমেন্ট ছাড়াও চর সোনাকুড় এলাকায় অবস্থিত স্যারের বাসভবনে গিয়ে তার সাথে আমাদের দেখা করতে হয়েছে। তার কথামত বিভাগের বাইরে সন্ধ্যার পরও তার পছন্দের জায়গায় আমাদের দেখা করতে হয়েছে।’
তারা অভিযোগে আরো বলেন, ‘একদিন রাত ১১টা পর্যন্ত আমাদেরকে থাকতে হয়েছে। সে সময় স্যার থিসিসের প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে ব্যক্তিগত কথা বলতে শুরু করতেন। ২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর আমাদের থিসিস ডিফেন্স এর নির্ধারিত দিনে স্যারের আদেশে থিসিসের কোড রিপোর্টসহ পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পর বলেন আজ তোমাদের পরীক্ষা হবে না। কিন্তু কেন হবে না তার সঠিক কোন উত্তর দেননি। হতাশ হয়ে ফিরে যাই আমরা।’
একজন ছাত্রী তার অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, একদিন মো. আক্কাস আলী বিভাগের নিচের গেট তালা লাগিয়ে তার সাথে আপত্তিকর আচরণ করেছেন। তার কক্ষেও আপত্তিকর আচরণ করেছেন বলে জানান ওই ছাত্রী।
তিনি বলেন, থিসিসের কথা বলে ওই শিক্ষক আমাদের নানাভাবে যৌন হয়রানি করেছেন।
এ ধরণের আচরণে বাধা দিলে তিনি ফেল করিয়ে দেয়ার হুমকি দেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করেছেন ওই দুই শিক্ষার্থী।
ঘটনার পর বিস্তারিত বিভাগের শিক্ষকদের কাছে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন উল্লেখ করে তারা বলেন, ‘এরপর বিভাগের শিক্ষকদের পরামর্শে আমরা উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ করি। কিন্তু অভিযোগের এম মাস পার হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এর ফলে আমরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি।’
অভিযুক্ত শিক্ষক মো. আক্কাস অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘যারা আমার নামে অভিযোগ করেছে তারা খুবই উচ্ছৃংখল ও বেপরোয়াভাবে ক্যাম্পাসে চলাফেরা করে। তাদের বেপরোয়াভাবে চলাফেরা করতে নিষেধ করায় তারা আমার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে এ অভিযোগ করেছে।‘‘
তিনি আরো বলেন, ‘শিক্ষক জামাল উদ্দিনসহ একটি গ্রুপ ওই ছাত্রীদের ম্যানেজ করে আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এ ধরনের মিথ্যা অপপ্রচার করছেন।’
এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনকে ফোন করে পাওয়া যায়নি।