চোরা কারবারী ও শিকারীদের প্রধান টার্গেটে পরিণত হয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার। বছরে সুন্দরবনের বাঘের শতকোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য করছে দেশী-বিদেশী চোরাচালানী চক্র। সুন্দরবনের বাঘ রক্ষায় এখনই সর্বোচ্চ ক্ষমতা ব্যবহার করে সমন্বিত ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আশ্রয় সুন্দরবনকে ঘিরে কমপক্ষে ২০টি বনদস্যু গ্রুপ ও ১৫টি চোরা শিকারী চক্র অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলে বন কর্তৃপক্ষ এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে খবর রয়েছে। বিদেশে পাচারের সময় ঢাকার শ্যামলী থেকে ২০১৩ সালে সুন্দরবনের তিনটি বাঘের বাচ্চা উদ্ধার করা হয়। গত এক বছরে ৫৭টি বাঘ-হরিণের চামড়া এবং কয়েকটি বাঘের হাড় উদ্ধার করেছে বনবিভাগ এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
খুলনার কয়রা থানার ওসি হরেন্দ্র নাথ সরকার জানান, এসব পাচার করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে পাচারকারীরা বলে তথ্য আছে পুলিশের কাছে।
খুলনা রেঞ্জের বন রক্ষক ড. সুনীল কুমার কুন্ডু জানান, চামড়ার একটা ডেকোরেটিভ ভ্যালু আছে। আর হাড় চলে যায় চীনের মতো দেশগুলোতে যেখানে নানা ওষুধ তৈরির কাজে তা ব্যবহার করার প্রচলন আছে।
বাঘের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জন্য বিশ্বে প্রতিদিন গড়ে একটি বাঘ শিকার করা হয়। দামী হাড় ও চামড়ার কারণে চীন, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড, হংকং, জাপান, কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং তাইওয়ানে পাচার হয়ে থাকে সুন্দরবনের বাঘ।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজির অধ্যাপক ড.মো. নাজমুস সাদাত জানান, বন্যপ্রাণী রক্ষায় নানা চুক্তিতে দেশ স্বাক্ষর করেছে অথচ এ সংক্রান্ত বন্যপ্রাণী আইনটিই এখন প্রয়োগ করতে হবে।
তবে সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণে দ্রুত সমন্বিত ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর।
বনবিভাগের তথ্য মতে, গত এক বছরে ভারতে শিকারীদের হাতে মৃত্যু হয়েছে ৫০টি বাঘের। সুন্দরবনের বাঘ রক্ষায় বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগের পরামর্শ দিয়েছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।