গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে ডাকা অর্ধদিবস হরতালে রাজধানীর শাহবাগে হরতাল সমর্থকদের উপর জল কামান ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হরতাল সমর্থক ও পুলিশের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। প্রায় দেড় ঘন্টা থেমে থেমে চলে এই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। ওই সময় ঘটনাস্থল থেকে একজন নারী হরতাল সমর্থকসহ মোট ৬ জনকে আটক করে পুলিশ।
গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে বাম মোর্চার আহ্বানে রাজধানীতে আজ সকাল ৬ টা থেকে অর্ধদিবস হরতাল শুরু হয়। বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টি-সিপিবি, বাসদসহ কয়েকটি বামপন্থী দল যৌথভাবে এ হরতালের ডাক দেয়।
এর আগে সকাল ৭টার দিকে হরতালকারীরা একবার টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করার চেষ্টা করলে পুলিশ জলকামান দিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে। এছাড়া পৌনে ৮টার দিকে পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙ্চুর করে আন্দোলনকারীরা। রাস্তা বন্ধ করার চেষ্টা করা হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়। এরপর আবার সমাবেশ করে রাস্তা বন্ধ করার চেষ্টা করা হলে পুলিশ হরতাল সমর্থকদের উপর চড়াও হয়।
পুলিশের টিয়ারশেল এবং জল কামান থেকে রক্ষা পেতে হরতাল সমর্থকরা এ সময় রাস্তা ছেড়ে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এসে অবস্থান নেন।পরে সেখান থেকে তারা কেন্দ্রীয় গণ-গ্রন্থাগারের সামনে দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের দিকে সরে যান। হরতাল সমর্থকরা যাতে শাহবাগে রাস্তা অবরোধ করতে না পারে, সেজন্য কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে সেখানে অবস্থান নেয় পুলিশ। এখনও তারা সেখানে অবস্থান করছেন।
এর আগে বাংলা মোটর থেকে কাঁটাবন পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন কয়েকটি মিছিল হয়। কাঁটাবনে মিছিল শেষে কিছুক্ষণের জন্য সেখানে অবস্থান নেন হরতালকারীরা। শুরুতে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও আন্দোলনকারীরা সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে শাহবাগে অবস্থান নেন। তখন তারা সাংবাদিকদের বলেন, এসএসসি পরীক্ষার্থীদের যেন অসুবিধা না হয়, সেজন্য সাড়ে ৯টা পর্যন্ত তারা যান চলাচলে কোনোরকম বাধা দেবেন না। তবে সাড়ে ৯টার পর আবার যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। সেখানে অস্থায়ী সমাবেশও অনুষ্ঠিত হয়।
হরতালে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অন্যান্য দিনের মতো জন সাধারণের স্বাভাবিক চলাচল লক্ষ্য করা গেছে। তবে যানবাহনের সংখ্যা কিছুটা কম ছিলো বলে রাজধানীবাসী অভিযোগ করেছেন।
মঙ্গলবার বেলা ১২টা পর্যন্ত রাজধানীতে এ হরতাল চলবে। একই সঙ্গে গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে আজ সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সব শ্রেণির গ্রাহকের জন্য গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। বর্তমানের চেয়ে গড়ে দাম বাড়ানো হয়েছে ২২.৭ শতাংশ। তবে দুই দফায় প্রায় সমহারে এই দাম বৃদ্ধি কার্যকর হবে। প্রথম দফায় আগামী ১ মার্চ ও দ্বিতীয় দফায় ১ জুন থেকে দাম বাড়বে। সেক্ষেত্রে মার্চ মাসের গ্যাসের বিল দিতে হবে বাড়তি দামে। এরপর জুন মাসের বিলে তা আরও এক দফা বাড়বে।
ছবি- ওবায়দুল হক তুহিন