১.
‘ঘড়ির দোকানে অসংখ্য সময় ঝুলে থাকে দেয়ালে দেয়ালে। প্রতিটি সময় সত্য। কেবল স্থানভেদে ওরা মিথ্যে হয়ে গেছে। ফটোসান চোখে প্রখর রোদকে মেঘলা মনে হয়। কেবল ঘাড় ঘুরালেই আপনার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যাবে না, পাছে লোকে আপনাকে ঘাড় ত্যাড়া বলবে।’ ফেসবুকে একটা লেখা পাবলিশ করেছিলাম; শিরোনাম: ঘড়ির দোকান থেকে বেরিয়ে এসে আরো একবার সময়কে চিনতে পারলাম।
ফেসবুকের অ্যালগারিদমের যাদুতে লেখাটা ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পীর কম্পিউটারে গিয়ে পড়লো। তখনও তিনি এমপি হননি। ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর। তিনি আমাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালেন। পরে দেখা হলে জানালেন, এই প্রথম তিনি অপরিচিত কাউকে রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছেন। সুতরাং, বাপ্পীর মানসিক উচ্চতা নিয়ে যে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তা আমি খারিজ করে দিচ্ছি।
২.
শৈশব-কৈশোরে বাড়িতেই দেখেছেন শওকত ওসমান বা শামসুর রাহমানের মতো লিজেন্ডদের। উড়ে এসে রাজনীতিতে জুড়ে বসেননি। এবং রাজনীতি করেন মস্তিষ্ক নয়, হৃদয় দিয়ে। বাবাকে প্রথমবার আইসিইউতে পাঠাচ্ছি, আর নাও দেখতে পারেন ভেবে কাঁদছেন মা, আমি কাঁদছি।
রক্ত চেয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেখে বাপ্পীর ফোন; কাঁদছো কেন? তোমার বাবার নাম কি? দেখছি। মিনিট বিশেক পর ফোন দিয়ে, রোগের ডিটেইল বলে সান্তনা। এমন মানবিক আপন আচরণ আমি কোনো রাজনীতিবিদের কাছ থেকে কখনো পাইনি।এমন হৃদয়বান নেতার এখন খুব অভাব। বাপ্পীর হৃদয় অস্বাভাবিক বড়। শেখ হাসিনা ভালোবাসতে ভালোবাসতেই বড় হয়েছেন। শুনেছি, শেখ হাসিনাও তাকে ভালোবাসেন। হাজার হোক, তার মায়ের নামেইতো বাপ্পীর নাম, ফজিলাতুন্নেসা!
৩.
আবেগী চরিত্র বলেই ‘শাহবাগ গাঁজা’ বিতর্কে জড়ালেন ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী। তার যুদ্ধটা হৃদয়জাত, এখানে কোনো ডিপ্লোমেসি নেই। কারণটা খুবই পরিষ্কার। শাহবাগ থেকে হাসিনাবিরোধী স্লোগানটা সে মেনে নিতে পারছে না, সেই শাহবাগ… যেখানে বাপ্পীদের ট্রাইব্যুনাল ইতিহাস গড়েছে! কূটনামি জানে না বলেই বাপ্পীর এক্সপ্রেশনটা এমন! অন্য কেউ হয়তো অন্যভাবে রিঅ্যাক্ট করতো।
৪.
শাহবাগ ইস্যুতে হেফাজতের ‘গাঁজা’ আর বাপ্পীর ‘গাঁজা’ এক নয়। হেফাজতীরা গাঁজা বলতে দেশাল-অ্যম্পুল বোঝালেও বাপ্পীর ‘গাঁজা’ সম্পূর্ণ রাজনৈতিক।
বাপ্পী শাহবাগে যে গাঁজা শনাক্ত করেছে তা, ১, ঢাবি এলাকা দিয়ে মেট্রোরেল যাবে না ২. রামপাল ঠেকাও ৩. লোডশেডিং মানি না ৪. রূপপুর পরমাণু বন্ধ করো ৫. পদ্মাসেতুতে খরচ কম করো ৬. রাস্তা নির্মাণে লুটপাট ৭. তেল অনুসন্ধান করা যাবে না ৮. মশা মারা যাবে না ৯. কাউয়া পোষা যাবে না.. এরকম হাজারো উন্নয়নবিরোধী পিনিকে দৌঁড়ায়।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে)