বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী একটি বন ‘শালবন’। এক সময় এদেশের সবচেয়ে বড় বনভূমি হিসেবে সুনাম ছিল। বন্যপ্রাণী সম্পদে ভরপুর ছিল বনের প্রতিবেশব্যবস্থা। কিন্তু নানাবিধ কর্মকাণ্ডে শালবন আজ ধ্বংসের মুখে।
বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে দেখা যায় শালবন। এই বনের সবচেয়ে বড় অংশ ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও গাজীপুর জেলায় অবস্থিত। রংপুর, দিনাজপুর, নওগাঁ, ঠাকুরগাঁও ও রাজশাহী অঞ্চলেও খন্ড খন্ড শালবন রয়েছে।
শালবনে প্রাধান্য বিস্তারকারী উদ্ভিদ শালগাছ। এছাড়া জারুল, কড়ই, আমলকি, সোনালু, বহেরা, হরিতকি, শিমুল প্রভৃতি উদ্ভিদ দেখা যায়। রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির অর্কিড, বুনোফুল ও আরোহী জাতীয় উদ্ভিদ।
শীতের শুষ্কতায় শাল গাছের পাতা ঝরে যায় বলে পুরো শীতকাল শালবন তার সবুজ রুপটি হারিয়ে মলিন হয়ে পড়ে।এজ্যে এই বনকে পত্রঝরা বনও বলা হয়। তবে এপ্রিল-মে মাসের দিকে গাছে নতুন পাতা গজারে শালবন আবার সবুজে ভরে উঠে। এসব বৈচিত্র্যময় উদ্ভিদের খাদ্য ও আশ্রয়ে বেঁচে আছে অসংখ্য বন্যপ্রাণী। এদের মধ্যে পাখি অন্যতম। তবে উভচর, সরীসৃপ ও স্তন্যপায়ী প্রাণীকেও বিচরণ করতে দেখা যায়।
এসব প্রাণী শালবন প্রতিবেশ ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ।এরা অলংকারের মতো সজ্জিত করেছে শালবনের প্রতিবেশ। এই প্রতিবেশব্যবস্থা আমাদের জীবন ও ঐতিহ্যে জড়িত।
কিন্তু বনভূমি উজাড় করে কৃষিজমির বর্ধন, অবৈধ্য স্থাপনা নির্মাণ এবং ভিনদেশী উদ্ভিদ চাষের ফলে বর্তমান এই বন ধ্বংসের মুখে। সেই সাথে বিলপ্তির পথে এখনকার বন্যপ্রাণী।
এজন্য বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষার মাধ্যমে ভবিষৎ প্রজন্মের জন্য সুস্থ প্রকৃতির নিশ্চয়তায় শালবন সংরক্ষণে এ অঞ্চলের মানুষকেই অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।