শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, তারা চাইলে যে কোনো সময় আলোচনা হবে। আলোচনার দ্বার খোলা।
শনিবার রাতে রাজধানীতে শাবিপ্রবি শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষক বা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনভিপ্রেত কিছু আমরা কামনা করি না। গত কয়েক দিন যা ঘটেছে তা আমরা চাইনি। এখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য কারো ইন্ধন আছে কি না, ব্যাপকতার ডাইমেনশন আছে কি না সেটা বুঝতে পারছি না।’
‘‘শুক্রবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে আমাদের রাজনৈতিক দল সেখানে গিয়েছে। আমিও গতকাল কথা বলেছি। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে বলেছি। তারা তখন উৎসাহের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিল। কিন্তু এরপর অনশনরতদের বাদ দিয়ে তারা আসতে চায়নি। ভার্চুয়ালি কথা বলতে চেয়েছে। আমরা সবাইকে নিয়ে বসতে চেয়েছি।’’
তিনি আরও বলেন, ‘সকলকে নিয়ে কথা বলতে পারলে ভালো হতো। অসুস্থতার কারণে আমি সেখানে (শাবিপ্রবি) যেতে পারিনি। শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা অসুস্থ হয়েছেন, আমরা তাদের খোঁজ নিচ্ছি। তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমি যেহেতু অসুস্থতার কারণে যেতে পারছি না, তারা কথা বলতে রাজি হলেই আমাদের প্রতিনিধি দল সেখানে যাবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে গত ১৩ জানুয়ারি রাত থেকে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ওই হলের কয়েক’শ ছাত্রী।
সেই আন্দোলনের এক পর্যায়ে জাফরিন আহমেদ পদত্যাগ করেন। এর মধ্যেই শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালানোর অভিযোগ উঠে। নতুন দাবি যুক্ত করে আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকেন শিক্ষার্থী।
গত ১৬ জানুয়ারি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা।
পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে লাটিচার্জ, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে আইআইসিটি ভবন থেকে উপাচার্যকে উদ্ধার করে পুলিশ।
তবে ওই ঘটনার পর অজ্ঞাত কয়েক’শ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। সেই মামলা প্রত্যাহার এবং উপাচার্যের পদত্যাগের নতুন দাবিতে গত বুধবার (১৯ জানুয়ারি) থেকে আমরণ অনশনে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন শিক্ষার্থীরা।
ভিসির বাসভবনের সামনে সেই অনশনের চতুর্থ দিন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়ে। আরও কয়েকজনকে অনশনস্থলেই স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে।