জুটি হল বেশ কয়েকটি, বড় হল না একটিও। তাতে বাংলাদেশের সংগ্রহটা হল সাদামাটা। যে উইকেটে ছিল পেস জুজুর ভয়, বল মাঠে গড়াতেই তার উল্টো দৃশ্য। রাওয়ালপিন্ডির উইকেট যেন ব্যাটসম্যানদের স্বর্গরাজ্য! সেখানে কিনা প্রথমদিনে মুমিনুলরা অলআউট ২৩৩ রানে। দায়টা কার? দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা নাজমুল হোসেন শান্ত দায়টা যাদের, তাদের কাঁধেই দিলেন। বললেন, ব্যাটসম্যানদের উচিত ছিল এমন উইকেটে টিকে থাকা।
রাওয়ালপিন্ডিতে নামার আগে উইকেটে সবুজ ঘাস দেখে বাংলাদেশ-পাকিস্তান দুদলেরই কথা ছিল পেসারদের পক্ষে। দুদলের একাদশেই থাকল পেস আধিক্য, তিনজন করে পেসার।
খেলার কিছু সময় গড়াতে না গড়াতেই ধারণা পাল্টাতে সময় লাগেনি। রাতের শিশির থাকায় উইকেটে খানিকটা মুভমেন্ট ছিল ঠিকই, সেটা এতটা ভয়ংকরও নয় যে কাঁপতে কাঁপতে উইকেট বিলিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা কাঁপেনওনি, তবে উইকেট বিলিয়ে এসেছেন ঠিকই।
অভিষিক্ত ওপেনার সাইফ হাসান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের স্বাদ পেলেন গোল্লা দিয়ে, বিসিএলে ট্রিপল সেঞ্চুরিতে দেশ সর্বোচ্চ ইনিংস খেলে পাকিস্তানে গিয়ে বলের লাইন না বুঝে এলবির ফাঁদে পড়লেন তামিম ইকবাল। শান্ত, মুমিনুল আর মাহমুদউল্লাহ অহেতুক খোঁচাতে গিয়ে আউট, যেগুলো একেকটি আত্ম-বিসর্জনের গল্প!
সকালের আর্দ্রতা কমে যেয়ে উইকেট কথা বলছিল ব্যাটসম্যানদের পক্ষেই। শান্ত-মুমিনুলের ৫৯ রান, মিঠুন-লিটনের ৫৪ রানের জুটিগুলি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে টিকে থাকতে পারলে রান হতোই। যেটায় ব্যর্থ টাইগাররা।
দিনশেষে শান্ত অবশ্য নিজেদের দোষ ঢাকতে চাইলেন না, বললেন ভুলটা ব্যাটসম্যানদের। দুটো বিষয় বোঝাতে চাইলেন ঘুরেফিরে, ‘পাকিস্তানি বোলাররা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালো বল করে গেছে। আমরা যে খুব সহজে রান করেছি এমন না। ওরা খুব ধৈর্য ধরে একটা জায়গায় ক্রমান্বয়ে বল করে গেছে। আমরা ব্যাটসম্যানরা আসলে ওই জায়গাতেই ভুল করেছি। আরেকটু ধৈর্য ধরে খেলতে পারলে মনে হয় রান করাটা সহজ হতো।’
প্রথম ইনিংসে ব্যাটসম্যানরা নিজেদের কাজ সারতে পারেননি। বাংলাদেশ তাই এখন চেয়ে বোলারদের দিকে। নিজেরা যে চাপের মধ্যে দিয়ে গেছেন, সেটাই পাকিস্তানকে ফিরিয়ে দেয়ার কথা ভাবছে মুমিনুলের দল। শুরু হয়ে গেছে দ্বিতীয় ইনিংস নিয়ে চিন্তা ভাবনাও।
‘আমাদের উচিত ছিল আজকের দিনটা শেষ করে আসা। কিন্তু যা হয়নি, হয়নি। আমরা দ্বিতীয় ইনিংস নিয়ে চিন্তা শুরু করেছি। যদি ভালো লাইন ধরে বল করতে পারি, তাহলে আশা করি ভালো কিছুই হবে।’