জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যদের নিষিদ্ধ করতে আন্তর্জাতিক ১২টি মানবাধিকার সংগঠন জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জিন পিয়েরে ল্যাক্রোইক্সের কাছে চিঠি দিয়েছে বলে জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস।
বৃহস্পতিবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ওয়েবসাইটে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।
দুই মাস আগে গত ৪ নভেম্বর, ২০২১ সালে জাতিসংঘকে শান্তিরক্ষা অপারেশন বিভাগ চিঠি দিলেও এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে কোন প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
১০ ডিসেম্বর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি হিউম্যান রাইটস অ্যাকাউন্টেবিলিটি অ্যাক্টের অধীনে র্যাব-কে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জড়িত” হিসাবে দোষী করেছে ।
২০২১ সালের মার্চ মাসেজাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট বলেছিলেন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের দ্বারা নির্যাতন এবং দুর্ব্যবহারের অভিযোগ একটি দীর্ঘস্থায়ী উদ্বেগের বিষয়। তারা বলছে, ধারাবাহিকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো গুরুতর অপরাধ করে এলেও বাংলাদেশ সরকার তাদের পুরস্কৃত করছে ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠাচ্ছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০০৪ সালের র্যাব গঠনের শুরু থেকে ২০২১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত র্যাবের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন, জোরপূর্বক গুম করার বিস্তর অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে তারা।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দপ্তর ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ।
চিঠিতে বলা হয়, বেনজির আহমেদ ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই সময় ১৩৬ টি বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং ১০টি গুমের ঘটনা ঘটেছে।
এক টেলিভিশন সাক্ষাত্কারে, পুলিশের প্রধান বেনজির আহমেদ বলেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা “মিথ্যা এবং বানোয়াট। মিথ্যা’র ওপর ভিত্তি করে কিছু লোক লোক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা থেকে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার ও “আমাদের সরকার এবং আমাদের দেশকে বিব্রত করার চেষ্টা করছে।”
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় র্যাবের উপ-প্রধান কে এম আজাদ বলেন, ‘কোনো অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা যদি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়, তাহলে দেশের স্বার্থে এই মানবাধিকার লঙ্ঘন করতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’
জাতিসংঘে চিঠি পাঠানো ওই ১২টি আন্তর্জাতিক সংস্থা হলো- অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, এশিয়ান ফেডারেশন অ্যাগেইনস্ট ইনভলানটারি ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স (এএফএডি), এশিয়ান ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ফোরাম-এশিয়া), এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন, এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশন (এএনএফআরইএল), ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট জাস্টিস প্রজেক্ট, ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্স ফর সিটিজেন পার্টিসিপেশন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ), ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস, রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস, দ্য অ্যাডভোকেটস ফর হিউম্যান রাইটস এবং ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অ্যাগেইনস্ট টর্চার (ওএমসিটি)।