গত বছর বিশ্বজুড়ে আলোচিত ঘটনা হিসেবে ঠাই করে নেয় মিয়নমারের রোহিঙ্গা শরনার্থী সমস্যা। মিয়ানমার থেকে বিতারিত এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে মানবিক আশ্রয় দিয়ে বিশ্ব বিবেককে প্রবলভাবে নাড়া দেয় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গুরুত্বের সাথে স্থান পায় বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের খবর।
গেল বছর আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে।
জরিপ অনুযায়ী চলতি বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের ক্ষেত্রে বিবেচিত ঘটনার তালিকার শীর্ষে আছে রোহিঙ্গা ইস্যু।
সংঘাত আর যুদ্ধ এড়িয়ে বিশ্বকে শান্তির অমিয় পতাকাতলে যারা নিয়ে আসেন তাদের হাতেই ওঠে শান্তির নোবেল। এক নরওয়ের স্থানীয় সময় সকাল ১১ টায় ( বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩.৩০ মিনিট) এ ঘোষিত হবে শান্তির সেই বার্তা বাহকের নাম।
এক দশকের বেশি সময় ধরে নোবেল বিজয়ীর নাম প্রকাশ প্রতিষ্ঠান ল্যাব রকস বলছে, ধারাবাহিকতা অনুসারে এবার নোবেল শান্তি পাওয়ার কথা কোন ব্যক্তির।
এদের বিবেচনায় জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর নামও উঠে আসছে। তবে অসলোর পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান হেনরিক আর্ডালের মতে এবারের নোবেলের অন্যতম দাবিদার বিশ্ব খাদ্য সংস্থা। ইয়েমেন থেকে শুরু করে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের জন্য সবচেয়ে বড় একটি চ্যালেঞ্জ ছিল ক্ষুধা মেটানো। আর সেটাতে এই সংস্থাটি দারুণ সফল।
একটুর জন্য যুদ্ধ থেকে কেরিয়া উপদ্বীপকে বাচিয়ে দেয়া শান্তিপূর্ণ আলোচনাও এগিয়ে নোবেল প্রাপ্তির দৌড়ে। ছয় দশক পর শুরু হওয়া শান্তির পর আলোচনার সুবাতাস বইছে উপদ্বীপে।
যদি কিম জং ইউন আর মুন একসাথে নোবেল পেলেও সেটি অপ্রত্যাশিত হবে না। দীর্ঘ এই তালিকায় থাকবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামও। আছেন অভিবাসন সমস্যা মোকাবেলায় অ্যাঙ্গেলা মেরকেল ও পোপ ফ্রান্সিসের মতো ব্যক্তিত্বরাও।
এছাড়া বছর জুড়ে আরেকটি আলোচিত বিষয় ছিল যৌন সহিংসতা ও হয়রানি। তাই #MeToo আন্দোলনের সাথে জড়িত কারো হাতেও উঠতে পারে নোবেল।
ডব্লিউএফপি, ওয়াট হেল্মেট সহ মনোনয়ন পেয়েছে ৩৩১ প্রার্থী যার মধ্যে ২১৬ জন ব্যক্তি এবং ১১৫ টি প্রতিষ্ঠান। যা নোবেল ইতিহাসে সর্বোচ্চ দ্বিতীয়।
তবে বরাবরের মতো নরওয়ের নোবেল শান্তি কমিটি এবারো গোপন রেখেছে মনোনয়নপ্রাপ্তদের তালিকা। তাই ঘোষণার আগে অনুমান করাটা বেশ কঠিন। কিন্তু ট্রাম্প কিংবা কিম জং ইউনের মতো ব্যক্তিদের হাতে শান্তির নোবেল উঠলে বিতর্ক যে কম হবে না ,সেটা আগেভাবেই বলে দেয়া যায়।
তবে নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকা অন্যান্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে আরো রয়েছে, সৌদি আরবের কারাবন্দি ব্লগার রাইফ বাদায়ি, গণমাধ্যমের সুরক্ষায় কাজ করা রিপোর্টার্স উইথাউট বর্ডারস, কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (আরএসএফ) ও রুশ মানবাধিকার সংস্থা এনজিও মেমোরিয়াল এবং দেশটির বিরোধীদলীয় সংবাদপত্র নোভায়া গ্যাজেটা।