সড়ক-মহাসড়কে মানুষ খুনের দায়ে আদালত কর্তৃক দুই চালককে দেয়া দণ্ডের বিরুদ্ধে গত দুইদিন নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের সমর্থনে দেশের পরিবহন খাতে ধর্মঘটের নামে নৈরাজ্য চালিয়েছে এক শ্রেণির শ্রমিক। এর ফলে কোটি মানুষ অবর্ণনীয় কষ্ট ভোগ করেছেন। ঘাতকদের মধ্যে সাভারের মীর হোসেন মীরু কোন সড়ক বা মহাসড়কে নয়, একজনের একান্ত পারিবারিক রাস্তায় ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যা করেছেন খোদেজা বেগম নামের এক নারীকে। অন্যজন জামির হোসেন। তার ঘটানো দুর্ঘটনায় প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও সাংবাদিক মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। বাসচালক জামিরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ, আর সাভারের মীরুকে মৃত্যুদণ্ড দেন দুটি আদালত। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, খুলনা বিভাগে চলা ধর্মঘট খুলনা বিভাগীয় শ্রমিক নেতারা যখন প্রত্যাহার করেছেন, তখন সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও ধৃষ্টতামূলক ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত এসেছে খোদ নৌ-পরিবহনমন্ত্রীর বাসার বৈঠক থেকে! সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়েই তিনি এ উল্টো প্রক্রিয়ায় জড়িয়েছেন। এর ফলশ্রুতিতেই রাজধানীসহ সারাদেশে ধর্মঘটের নামে শ্রমিকরা এত নৈরাজ্য দেখানোর সাহস পেয়েছে বলে আমরা মনে করি। দেশের সকল মানুষ যখন এই ধর্মঘটের বিরুদ্ধে তখনও এই মন্ত্রী নৈরাজ্যের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। তিনি পেশি শক্তিকে রাষ্ট্র এবং বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছেন। তিনি আসলে সংবিধান রক্ষার বদলে শ্রমিক সংগঠনের কোটারি স্বার্থ রক্ষায়ই বেশি তৎপর। তার নিজ দলের নেতারাও বলছেন, এটা কোনভাবেই একজন মন্ত্রীর কাজ হতে পারে না। তাই মন্ত্রী হিসেবে তার মন্ত্রিসভায় থাকার নৈতিক অধিকার আছে কিনা সেই প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে। আমরাও মনে করি, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনো উগ্র জনগোষ্ঠিকে লেলিয়ে দিয়ে কেউ ওই রাষ্ট্রের মন্ত্রী থাকতে পারেন না। সরকার এবং সরকার প্রধানকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে।