চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

শাকিব খানকে সোজা ব্যাটে খেলার সামর্থ্যহীনদের কাণ্ড

সম্প্রতি যৌথ প্রযোজনার ছবি নিয়ে শাকিব খানের বিভিন্ন মন্তব্যের কারণে তাকে বহিস্কারসহ অপ্রীতিকর বিভিন্ন ঘটনা ঘটে গেলেও গত কয়েক বছরের মতো এবার ঈদেও শাকিব খান অভিনীত সিনেমাগুলো দর্শকপ্রিয় হয়েছে। তার বিপক্ষ শক্তি এক্ষেত্রে  একজোট হয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি দিলেও তার ছবি সাধারণ মানুষকে সিনেমা হলমুখি করেছে। অনেক দিন পর সিনেমা হলে দর্শকদের দীর্ঘ লাইন দেখে এ বিষয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আর রাজী।

‘হলের সিনেমা: গরীবের একমাত্র বৈধ বিনোদনে বাধা দেয় যেই জন, সেই জন আসল পাপী’ শিরোনামে দেয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, ‘একটা সময় আমার এই ছোট্ট নাটোর শহরে চার চারটা সিনেমা হল ছিল। তারপর একে একে তিনটা হল বন্ধ হয়ে গেল। আর একটা হল রইলো বটে কিন্তু তার মাঝে ঢুকে গেল মার্কেট। বাইরে থেকে বোঝাই যায় না, এখানে সিনামা দেখানোর ব্যবস্থা আছে।

ঈদের দিন হঠাৎ দেখি তুমুল ভিড় সেই হলে, লোকজন সারি ধরে সিনামা দেখতে ঢুকছে। একটা ব্যানারও চোখে এলো। চলছে জ্যাজ মাল্টিমিডিয়ার ছবি। রিক্সা, অটোওয়ালাদের মধ্যেও উত্তেজনা। এই উত্তেজনা আমি টের পেতাম আরও অনেক অনেক বছর আগে।

পরদিন আবারও শহরে গেলাম। আবারও নজর কাড়ল বড় জটলা, বড় ভিড়, দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ।’

এ বিষয়টিকে বিস্ময়কর উল্লেখ করে তিনি লিখেন, ‘বিস্ময়কর! তার মানে, এত্তো মানুষ হলে এসে সিনামা দেখতে চায়? এত্তো দর্শক! এতো দিন যে শুনছিলাম, দর্শক হলে এসে সিনেমা দেখতে চায় না!

কারা এই সিনেমার বিরুদ্ধে, এত্তো মানুষের বিনোদন-তৃষ্ণার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছিল? এই প্রথম আমার মনে হলো, গত কয়েক মাস ধরে শাকিব খানকে নিয়ে যা হয়েছে, সে সব দীর্ঘ ষড়যন্ত্রের অংশ। এই অভিনেতাকে সোজা ব্যাটে খেলার সামর্থ্য যাদের নাই, তাদের কাণ্ডই হবে ওগুলো।

হঠাৎই দর্শক মুখোরিত সিনেমা হল মনের মধ্যে কোত্থেকে আনন্দের হাওয়া বইয়ে দিল। তার মানে, এই দেশের মানুষ আর সব দেশের মানুষের থেকে ভিন্ন নয়! বিশ্বজুড়ে চলচ্চিত্রের যে জয়যাত্রা তাতে যোগ দিতে আমাদের দর্শকও উন্মুখ! এই স্বাভাবিকতা কোথায় হারিয়ে গেছিল? অচিরেই আবার কি হারিয়ে যাবে? এদেশের গরীব মানুষের একমাত্র বৈধ বিনোদনের পথ নানান উছিলায় কি রুদ্ধ করে দেওয়া হবে আবার?’

তার মতে, ‘দেশের হোক, বিদেশের হোক, বাংলা ভাষার হোক, হিন্দি ভাষার হোক, ইংরেজি বা আরবি-ফার্সি-উর্দু ভাষার হোক, হোক বাংলায় ডাব করা কিংবা নির্বাক, মানুষ যা গ্রহণে ইচ্ছুক তার পথ রোধ করে যারা দাঁড়ায় তারাই তো মানুষের শত্রু। তারা সেইসব পণ্ডিতমন্য অমানুষ যারা সাধারণ মানুষকে অশিক্ষত বলে ধরে নিয়ে আচ্ছা করে শিক্ষা দিতে চায়।

মানুষের চিত্তের ক্ষুধা নিবারণের বিরুদ্ধে বরকন্দাজি করে যারা, নিজেদের কায়ামি স্বার্থে একদিন- ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য নানান উছিলায় পেটের ক্ষুধা নিবারণেও বাধা দিতে পারে সেই সব আত্মস্বার্থান্ধ জন! ভুলে গেলে চলে না, গণমানুষের বিবেচনার ওপর আস্থা হারায় যে জন সেই আসল পাপী, সেই প্রকৃত বর্বর।’