যুদ্ধ ও সহিসংতা থেকে বাঁচতে শরণার্থীতে পরিণত হওয়া মানুষগুলোর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করলো লাখো ইউরোপীয়। শনিবার ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে আরও বেশি শরণার্থীকে গ্রহণের দাবিতে ও তাদের স্বাগত জানিয়ে র্যালি বের করা হয়। লন্ডনসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি বড় শহরে শরণার্থীদের সমর্থনে শোভাযাত্রা হয়েছে।
জার্মানীতে শনিবার ৯ হাজার অভিবাসী এসে পৌঁছেছে। আশা করা হচ্ছে সপ্তাহ শেষে এই সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে।
এদিকে শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়া নিয়ে ইউরোপীয় দেশগুলোর চলমান মতবিরোধ নিরসনে ব্যর্থ হয়েছে জার্মানি। পূর্বাঞ্চলীয় পাঁচটি দেশের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডনে দশ হাজারেরও বেশি মানুষ রাস্তায় নেমে অভিবাসীদের প্রতি সংহতি জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এর সরকারী বাসভবন ডাউনিং ট্রিটে গিয়ে শেষ হয় মিছিলটি। এতে অংশ নেওয়া মানুষেরা ‘সীমান্ত খুলে দাও’ এবং অভিবাসীদের আসতে দাও’ শ্লোগান দেয়।
সুইডেনের রাজধানী স্টোকহোমে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে অভিবাসী গ্রহণে দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়। অভিবাসী গ্রহণে চাপ সৃষ্টির জন্য ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ পার্লামেন্ট ভবনের সামনে জমায়েত হয়।
অভিবাসীদের পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে অভিবাসীবিরোধী বড় সমাবেশের পাশাপাশি পক্ষেও ছোট সমাবেশ হয়েছে। পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশোতে ইসলামবিরোধী শ্লোগান দিয়ে অভিবাসীদের আশ্রয় দেয়ার বিরোধিতা করা হয় । অভিবাসীবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে চেক রিপাবলিকের রাজধানী প্রাগে। ওইসব দেশে কম সংখ্যায় হলেও অভিবাসীদের পক্ষেও রাস্তায় নামে মানুষ।
বিপুলসংখ্যক শরণার্থীর কারণে ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর জাতীয় বাজেটে ব্যাপক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় শরণার্থীদের স্রোত ঠেকাতে সিরিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোকে ৩০০ কোটি ইউরো সহায়তা দিতে ইইউর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী।
গৃহযুদ্ধকবলিত সিরিয়া, ইরাক ও লিবিয়া এমনকি আফগানিস্তান, পাকিস্তান থেকে প্রতিদিন যাচ্ছে হাজারো শরণার্থী ও অভিবাসন প্রত্যাশী মানুষজন। জার্মানি তাদের জন্য সীমান্ত খুলে দিলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) সব দেশ ততটা উদার হতে পারেনি।
তবে দেশগুলোর নাগরিকরা ঠিকই মানবতার ডাকে সাড়া দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তারা ‘ইউরোপসেওয়েলকাম’ নামে জনমত গড়ে তুলেছেন। ‘ডে অব অ্যাকশন’ নাম দিয়ে শরণার্থীদের গ্রহণের পক্ষে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে র্যালির পাশাপাশি নানা কর্মসূচিও পালন করা হয়। সবচেয়ে বড় র্যালিটি হয় লন্ডনে।
অন্যদিকে, অভিবাসনবিরোধী র্যালি হয় চেক রিপাবলিক, পোল্যান্ড ও স্লোভাকিয়ায়।