দেশে শক্তিশালী পুঁজিবাজার গড়তে না পারলেও এর শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।
রোববার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আয়োজিত ‘বিনিয়োগ শিক্ষার গুরুত্ব ও বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
বাংলাদেশে এখনও শক্তিশালী পুঁজিবাজার গড়ে ওঠেনি মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিএসইসির বয়স ২৫ বছর হয়ে গেছে, এ সময়ের মধ্যে আমরা একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার গড়ে তুলেছি- এ কথা বলব না। তবে শক্তিশালী পুঁজিবাজারের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে দুইবার ধস নেমেছিল। এজন্য অনেকে চিন্তিত। এই চিন্তার ফসলই হলো সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ প্রায় ৮ বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে। আমি খুশি এজন্য যে, এই প্রতিষ্ঠান অত্যন্ত ধৈর্য ও নিষ্ঠার সঙ্গে সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন।
সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন যেভাবে গড়ে উঠছে, তাতে অতি শিগগিরই শক্তিশালী পুঁজিবাজার গড়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।
মুহিত বলেন, আমাদের বিনিয়োগ আসলেই খুবই কম। এখন হয় তো ৩০ শতাংশ বিনিয়োগ করছি। তার মধ্যে ২২ শতাংশ বেসরকারি খাতের, বাকিটা সরকারের। প্রতিবেশী দেশগুলোতে বিনিয়োগের হার অনেক বেশি। ভারতে বিনিয়োগের হার সব সময় বেশি ছিল। ত্রিশের দশকেও ভারতের বিনিয়োগের হার ৩০ শতাংশের বেশি ছিল।
‘‘যাই হোক আমরা একটু একটু করে ঠেলেঠুলে বিনিয়োগ প্রায় ৩০ শতাংশে নিয়ে এসেছি। আশা করছি, এটা আরও একটু বাড়বে এবং আর একটু বাড়লে আমাদের অর্থনীতির যে একটি ঊর্ধ্বগতি এসেছে এটা আরও বেগবান হবে, শক্তিশালী হবে।’’
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার ১০ বছর ক্ষমতায় আছে নিরবচ্ছিন্নভাবে, এটা জাতির জন্য একটা সৌভাগ্য। এমন নিরবচ্ছিন্ন ক্ষমতায় না থাকলে, এ রকম ঊর্ধ্বগতি এতো সহজে পাওয়া যায় না। আরও পাঁচটি বছর যদি শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করতে পারি তাহলে বাংলাদেশ এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছাবে সেখান থেকে ১০-১৫ বছরে একটি সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ে উঠতে কোনো অসুবিধা হবে না।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, পুঁজিবাজারের স্বার্থে প্রয়োজন হলে বুক বিল্ডিং পদ্ধতি স্থগিত বা বন্ধ করা হবে।
বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিঘ্নিত হয় এমন কোন কাজ না করার জন্য মার্চেন্ট ব্যাংকারদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) জন্য মিথ্যা হিসাব (ফলস অ্যাকাউন্ট) নিয়ে আসলে বিএসইসির কিছু করার থাকে না। এক্ষেত্রে নিরীক্ষক ও মার্চেন্ট ব্যাংকারদেরকে সঠিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। যাতে প্রাথমিক পর্যায়ে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা পায়।
একইসঙ্গে ৫ বছর লভ্যাংশ দেওয়ার সক্ষমতা নেই এমন কোম্পানিকে পুঁজিবাজার না আনার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম প্রমুখ।