টেস্ট লিগ কিংবা ওয়ানডে লিগ চালু হলে বেশি বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে বাংলাদেশ। এই খবরে এখনি খুশি হচ্ছে না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বোর্ডের সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলছেন, ‘শক্তিশালী দলগুলোর বিপক্ষে নিয়মিত খেলতে পারবো কি না, আমাদের সেই নিশ্চয়তা পেতে হবে।’
লন্ডনে সবশেষ আইসিসি সভায় প্রধান নির্বাহীদের কমিটি (সিইইস) টেস্ট ও ওয়ানডে লিগের জন্য তৈরি করেছে সমন্বিত এক সূচী। সে অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে শুরু হবে টেস্ট লিগ। আর ২০২০ সাল থেকে শুরু হবে দুই বছর মেয়াদী ওয়ানডে লিগ। নতুন কাঠামোয় রূপ নিতে যাওয়া ফিউচার ট্যুর প্ল্যান (এফটিপি) এখন আইসিসি বোর্ডের অনুমোদনের অপেক্ষায়। বোর্ড অনুমোদন দিলে নতুন পরিকল্পনার খুঁটিনাটি চূড়ান্ত করবে আইসিসি। প্রস্তাবনা গৃহীত হলে সব দলের ম্যাচ খেলার সংখ্যা সমান হবে; আইসিসির কাছ থেকে এমন নিশ্চয়তা পেয়েছে বিসিবি।
‘সর্বশেষ মিটিংয়ে যে বিষয়টি এসেছে, তা নিয়ে কথা চলছে। প্রত্যেকটা দলই চায় তাদের চেয়ে শক্তিশালী দলের সঙ্গে খেলতে। এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে আইসিসি কাজ করছে। প্রতিটি দেশের বোর্ড আইসিসির সঙ্গে মিলে কাজ করছে। পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবনাটা আমাদের দেয়া হবে। তারপর এটা নিয়ে কথা বলবো। আপাতত এটা আলোচনার পর্যায়ে আছে। এরই মধ্যে আমরা যে নিশ্চয়তা পেয়েছি, সেটা হলো প্রতিটি দলের ম্যাচসংখ্যা সমান হবে।’ বলেন নিজামউদ্দিন চৌধুরী।
ওয়ানডে লিগ প্রাথমিকভাবে হওয়ার কথা ছিল তিন বছরের চক্রের। পরে তা হয়ে গেছে দুই বছরের। তাতে ১২টি প্রতিপক্ষের সবার সঙ্গে খেলার চেয়ে আটটির বিপক্ষে খেললেই হবে। কোন দল কোন আট দলের বিপক্ষে খেলবে, তা নিয়ে কাজ করছে আইসিসি। ওয়ানডে লিগের সিরিজগুলো হবে তিন ম্যাচের। দুই দেশের অনুমোদনের প্রেক্ষিতে তা তিন ম্যাচের বেশিও হতে পারে। তবে বাড়তি ম্যাচগুলোর পয়েন্ট ওয়ানডে লিগে যোগ হবে না।
সব দলের ম্যাচ সংখ্যা সমান হলে বাংলাদেশের লাভ। কেননা ভারত, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো বড় দলের সমান ম্যাচ পায় না বাংলাদেশ। ২০১৫ সালে সাউথ আফ্রিকা সিরিজের পর প্রায় ১৪ মাস বিরতিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। নতুন প্রস্তাবনায় দীর্ঘ বিরতি পড়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
‘আমাদের যেটা আশ্বস্ত করা হয়েছে, সেটা হলো নিয়মিত খেলা হবে। আগে দেখা যেতো দীর্ঘ বিরতি পড়ে যেত, সেটা হবে না। নিয়মিত খেলা হবে, এ রকম আশ্বাস দেয়া হয়েছে। আমাদের যে বিষয়ে নিশ্চয়তা নিতে হবে, সেটা হলো সবার সঙ্গে যাতে খেলা থাকে। আমরা এটা নিয়েই চিন্তা করছি। এ রকম একটা কাঠামো আমরা চাই।’
অক্টোবরে আইসিসি সভায় পূর্ণাঙ্গ রূপ পেতে পারে সিইইস’র প্রস্তাবনা। আর তাহলে ৯টি দেশের প্রত্যেকে চার বছরের চক্রে সর্বোচ্চ ১২টি টেস্ট সিরিজ খেলতে পারবে। প্রতি সিরিজে থাকবে অন্তত দুটি করে ম্যাচ। সিরিজের অর্ধেক ম্যাচ হবে নিজ দেশে; বাকি অর্ধেক বিদেশে।
প্রস্তাব অনুসারে বাংলাদেশ ২০১৯-২০ মৌসুমে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া, বিদেশে ভারত ও শ্রীলঙ্কা, ২০২০-২১ মৌসুমে নিজ দেশে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও নিউজিল্যান্ড, বিদেশে পাকিস্তান, ২০২১-২২ মৌসুমে ঘরের মাঠে পাকিস্তান, বিদেশে নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ২০২২-২৩ মৌসুমে ঘরের মাঠে ভারত ও শ্রীলঙ্কা এবং বিদেশে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়ে টেস্ট সিরিজ খেলবে।
এই চার বছরের চক্রে কেবলমাত্র ইংল্যান্ডের সঙ্গে হোম কিংবা অ্যাওয়ে কোনো সিরিজের সূচী নেই বাংলাদেশের। বিসিবির প্রধান নির্বাহী জানিয়েছেন, এই টেস্ট লিগের বাইরেও নিজেদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজন করতে পারবে যেকোনো দুই দেশের বোর্ড।