আজ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। দিনটি আমাদের জাতীয় দিবসও। স্বাধীনতার ৪৯তম বার্ষিকী বা ৫০তম দিবসে এই প্রথমবার ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে জাতি পালন করছে দিনটিকে।
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত আমাদের প্রিয় বাংলাদেশও। আর এ কারণেই অন্যান্য বছর স্বাধীনতা দিবসের যেসব রাষ্ট্রীয় বা প্রতিষ্ঠানিক কর্মসূচি থাকে, তার সবই বাতিল করে দেয়া হয়েছে। বলতে গেলে- করোনা দুর্যোগে দেশ আজ অবরুদ্ধ।
তবে দেশ অবরুদ্ধ হলেও বাঙালি জাতি থেমে নেই। তারা লড়াই করছে- সেই স্বাধীনতার মাসেই, যে মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল স্বাধীনতার যুদ্ধে। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াই করে ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতা। আর এখনকার লড়াই ভয়াবহ এক ভাইরাসের বিরুদ্ধে।
একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দী হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু বলে গিয়েছিলেন, “ইহাই হয়তো আমাদের শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানাইতেছি যে, যে যেখানে আছে, যাহার যাহা কিছু আছে, তাই নিয়ে রুখে দাঁড়াও, সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করো। পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলার মাটি হইতে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও।’’ (বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র, তৃতীয় খণ্ড)
সেদিন আমাদের সামনে ছিল চেনা এক শত্রু পাকিস্তানী হানাদার আর তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আল-বদর, আল-সামস। কিন্তু আজকে আমাদের সামনে করোনা নামের যে শত্রু তা অচেনা, অদৃশ্য। তাকে দেখা যায় না। দ্রুত স্থান বদলে এক শরীর থেকে আরেক শরীরে চলে যায়। তাই এই যুদ্ধ কঠিন থেকে কঠিনতম এক যুদ্ধ।
তাতে জয়ী হতে চাইলে সবাই মিলে লড়াইয়ের কোনো বিকল্প নেই। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় আমরা যেমন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছি, খাবার না পেয়ে অন্যের খাবার ভাগ করে খেয়েছি- ঠিক তেমনি ভাবেই এই যুদ্ধে আমাদের লড়তে হবে।
আমরা মনে করি, যার যা আছে- তা নিয়ে সম্মিলিতভাবে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে বিজয়ী হওয়া সম্ভব। তবে তার আগে সবাইকে সচেতন হতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা আর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিকল্প নাই।