লেবাননের রাজধানী বৈরুতে দুই দফায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে ব্যাপক হতাহতের ঘটনায় চিকিৎসা সহায়তা পাঠানোসহ হতাহতের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।
চিকিৎসা সহায়তা পাঠানোর পরিকল্পনা করছে ফ্রান্স, রাশিয়া, সিরিয়া, সৌদি আরব, কাতার, ইরাক ও কুয়েত।
এদিকে, বিস্ফোরণে হতাহতদের প্রতি শোক ও শ্রদ্ধা জানাতে দেশটিতে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী বন্ধু প্রতীম রাষ্ট্রগুলোকে লেবাননের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মহাসচিব লেবাননের বৈরুতের ওই ঘটনায় হতাহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বিস্ফোরণে আহতদের চিকিৎসা সহায়তার জন্য তেহরান মেডিকেল দল প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছে। জর্ডানের রাজা ফিল্ড হাসপাতাল নির্মাণের সহায়তার কথা জানিয়েছে।
ডাচ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ডাক্তার, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের ৬৭ জনের একটি দল প্রস্তুত রয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিস্ফোরণকে ভয়ংকর হামলা বলে উল্লেখ করে বোম্ব জাতীয় কিছুর কারণেই এই শক্তিশালী বিস্ফোরণ হয়েছে বলে জানিয়েছন। তবে তিনি কোনো সহায়তার কথা জানাননি।
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে । এছাড়াও আহত হয়েছে চার হাজারের অধিক মানুষ।
মঙ্গলবার অতি বিস্ফোরক রাসয়নিক পদার্থের গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে বলে জানায় দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়ক প্রধান।
বন্দরে বেশিরভাগ এলাকাই বিধ্বস্ত হয় এবং রাজধানীর আশপাশের ভবন ও পার্ক করা গাড়িগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, অনেক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা পরও ওই এলাকা থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে বলেছেন, বিস্ফোরণের আওয়াজ ছিল তীব্র ও কান ফাটানো। ভিডিও ফুটেজে অনেক গাড়ি এবং ভবন বিধ্বস্ত হতে দেখা গেছে।
প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব এই ঘটনাকে বিপর্যয় বলে বর্ণনা করেছেন এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছেন।
একই সাথে আজ বুধবার রাষ্ট্রীয় শোক দিবস ঘোষণা করেছেন। এছাড়া দুই সপ্তাহের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন এক টু্ইট বার্তায় বলেছেন, কোনো গুদামে ২,৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মত বিস্ফোরক অনিরাপদভাবে মজুত রাখার বিষয়টি “অগ্রহণযোগ্য”।
লেবানন ভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠি হেজবুল্লাহকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ইসরাইলের সঙ্গে লেবাননের সম্পর্ক অত্যন্ত খারাপ যাচ্ছে।
তবে ইসরাইলের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এই বিস্ফোরণের সঙ্গে ইসরাইলের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইরান, মালয়েশিয়া, ভারত, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নিহতদের সমবেদনা ও শোক প্রকাশ করেছেন।
ইরান ও সাইপ্রাস জরুরি ভিত্তিতে মেডিকেল টিম পাঠানোর প্রস্তাব করেছে।
যুক্তরাজ্য বলছে, এখনই কোনো ধারণা করা যাবে না। তবে আমাদের বিশ্বাস, লেবানন কর্তৃপক্ষ খুব শিগগিরই এই বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধান করে প্রকৃত কারণ জানতে পারবে।