প্রথম থেকেই ম্যাচের লাগাম ছিল ভারতের হাতে। তবে চতুর্থ দিনশেষে অস্ট্রেলিয়া শিবিরের হয়ে নাথান লায়ন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন শেষদিনে লড়াই না ছাড়ার। অজি স্পিনার বল হাতে নিজের ভূমিকা যথাযথ পালন করেছেন। পাশাপাশি আস্থা রেখেছিলেন ব্যাটসম্যানদের উপরেও।
পাকিস্তানের বিপক্ষে দুবাই টেস্টের শেষদিনের অবিস্মরণীয় লড়াইয়ের উদাহরণ টেনে লায়ন জানিয়েছিলেন, অ্যাডিলেডের পিচ শেষদিনে এমনকিছু ব্যাট করার অযোগ্য হয়ে উঠবে না। তাই দুবাইয়ে পারলে অস্ট্রেলিয়া অ্যাডিলেডেও নিশ্চিত পারবে।
কোণঠাসা হয়েও অস্ট্রেলিয়া অ্যাডিলেড ওভালে জয়ের আশা ছাড়েনি। প্রতিশ্রুতি মতো অজি ব্যাটসম্যানরা শেষদিনে অনবদ্য লড়াই উপহার দিলেও শেষ রক্ষা হয়নি। দশম উইকেটের অস্ট্রেলীয় জুটি ভারতের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু তীরে এসে তরী ডোবায় দুঃখ পেতে হয়নি ভারতকে। একদশক পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়াকে হারাল ভারত। আর এই প্রথম অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে জয় দিয়ে টেস্ট সিরিজ শুরু করল তারা।
অ্যাডিলেডে হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ৩১ রানে হারিয়ে চার ম্যাচ সিরিজে ১-০তে লিড নেয়ার পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথমবার টেস্ট সিরিজ জয়ের ভিত প্রস্তুত করেছে বিরাট কোহলির দল।
জয়ের জন্য ৩২৩ রানের টার্গেট নিয়ে ব্যাট করতে নামা অস্ট্রেলিয়া শেষ ইনিংসে অলআউট হয় ২৯১ রানে। ব্যর্থ হয় অস্ট্রেলিয়ার লেজের ব্যাটসম্যানদের চোয়াল চাপা প্রতিরোধ।
দিনের প্রথম সেশনে গত দিনের অপরাজিত মার্শ-হেড জুটির প্রতিরোধ ভাঙতে পারলেও ভারতের সামনে সামনে কাঁটা হয়ে দাঁড়ান অজি অধিনায়ক টিম পেইন।
শুরুতেই ট্রাভিস হেডকে দুর্দান্ত বাউন্সারে ফিরিয়ে দেন ইশান্ত শর্মা। ১৪ রান করে রাহানের হাতে ধরা পড়েন তিনি। পেইনের সঙ্গে ৪১ রানের পার্টনারশিপ গড়ার পর ক্রিজ ছাড়েন মার্শ। ততক্ষণে ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। ১৬৬ বলে ৫টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৬০ রান করে বুমরাহ’র বলে উইকেটকিপার রিশভ পান্টের হাতে ধরা দেন মার্শ।
পেসার প্যাট কামিন্সকে সঙ্গে নিয়ে লাঞ্চের আগের বাকি সময়টুকুতে লড়াই চালান পেইন। মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে পেইন অপরাজিত ছিলেন ব্যক্তিগত ৪০ রানে। তবে চা-বিরতির পর নিজের ইনিংসকে খুব বেশিদূর টেনে নিতে পারেননি তিনি। আর মাত্র ১ রান যোগ করার পর বুমরাহর বলে আউট হন অজি অধিনায়ক। মিচেল স্টার্ক ৪৪ বলে ২৮ রানের উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে সামির বলে সাজঘরে ফেরেন।
প্যাট কামিন্স ১২১ বলে ২৮ রানের লড়াকু ইনিংস খেলে বুমরাহর শিকার হন। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ভারতীয় বোলারদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ান লায়ন। পান্টের হাত থেকে ‘জীবন’ পেয়ে লায়ন শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৩৮ রানে। অশ্বিনের বলে হ্যাজেলউড আউট হয়ে যান ১৩ রান করে।
ভারতের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে তিনটি করে উইকেট নেন সামি, বুমরাহ ও অশ্বিন। একটি উইকেট ইশান্ত শর্মার। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি ও দ্বিতীয় ইনিংসে হাফসেঞ্চুরি করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন চেতেশ্বর পূজারা। দুদলের দ্বিতীয় টেস্টটি শুরু হবে ১৪ ডিসেম্বর, পার্থে।