ক্রাইস্টচার্চ থেকে ফিরেই চলে গিয়েছিলেন গ্রামের বাড়ি খুলনায়। বসেন বিয়ের পিঁড়িতে। নতুন বউকে সঙ্গে নিয়েই ঢাকায় ফিরেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এবার তার ক্রিকেটে ফেরার পালা। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর হয়ে সোমবার নামবেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ খেলতে। রোববার মিরপুরের একাডেমি মাঠে নিয়েছেন তারই প্রস্তুতি। ফিটনেস নিয়ে কিছুটা কাজ ও ব্যাটিং-বোলিংয়ের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এ তরুণ জানান বিশ্বকাপ ঘিরে নিজের ভাবনার কথা।
লিগের মাঝেই সময় বের করে মিরাজ চালিয়ে যাবেন বিশ্বকাপের প্রস্তুতি। নিজের প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া এ তরুণ অফস্পিনিং অলরাউন্ডার বোলিং ছাড়াও ব্যাট হাতে ৩০-৪০ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলে রাখতে চান দেশের জন্য অবদান।
মে মাসের শুরুতেই আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ, তারপর ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ। মাসখানেক হয়ত দেশে থাকবেন প্রিমিয়ার লিগও খেলবেন। বিশ্বকাপের জন্য কীভাবে প্রস্তুত হওয়ার কথা ভাবছেন?
প্রিমিয়ার লিগ চলাকালীন যে ১ মাস সময় পাবো এই সময়ের মধ্যেই নিজেদেরকে গুছিয়ে নিতে হবে। কারণ আমাদের হাতে ওইরকম সময় নেই। প্রিমিয়ার লিগের ফাঁকে ফাঁকে যতটুকু প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব ততটুকুই নেব। আর অবশ্যই আমাদের স্পিনারদের যে দায়িত্ব সেটা হলো পেসারদের সহযোগিতা করা। কারণ উপমহাদেশে খেলা হলে স্পিনারদের ভূমিকাটা বেশী থাকতো। কিন্তু ইংল্যান্ডে পেসারদের সাপোর্ট করতে হবে। এই কাজটা যতটা সম্ভব করতে পারলে আমাদের টিম আরও ভালো করবে।
স্পিনারদের সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম তাহলে তো চ্যালেঞ্জ বেশি…
আমার কাছে মনে হয় স্পিনারদের রানটা চেক দেয়া খুব জরুরি। ওইসব দেশে কিন্তু সেখানে স্পিনাররা বেশি সাহায্য পাবে না। উইকেট না বের করতে পারলেও ইকোনমিক্যাল বোলিং করতে হবে। ওভার প্রতি পাঁচ সাড়ে পাঁচ করে রান দিলে আমার কাছে মনে হয় অনেক ভালো বোলিং ফিগার। এর মধ্যে দুই-একটা উইকেট নিতে পারলে তো অনেক ভালো। এটাই যে, পেসারদের সাহায্য করা আর রান কম দেয়া স্পিনারদের মূল ভূমিকা থাকবে বিশ্বকাপে।
ইংল্যান্ডে ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলার অভিজ্ঞতা কতটা কাজে লাগবে?
আমার একটা ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছিল। উইকেট খুব কাছ থেকেই দেখেছি, অনেক ভালো উইকেট থাকে। আমি যদি চেষ্টা করি ভালো জায়গায় বোলিং করার তাহলে ব্যাটসম্যান অনেক সময় ভুল করে বসতে পারেন। ওইখানে তেমন স্পিন থাকবে না, সুন্দরভাবে বল ব্যাটে আসে। পরিকল্পনা অনুযায়ী বোলিং করতে হবে, সেটা নিয়েই এখন থেকে কাজ করবো। কীভাবে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায়…আশা করি সবাই মিলে একসাথে করলে ভালো কিছুই হবে।
কীভাবে কাজে লাগাবেন সামনের এক মাস?
এই এক মাসে প্রিমিয়ার লিগের মাঝে ফিটনেসের কাজ করতে হবে আবার ড্রিল আছে বোলিংয়ের, কিছু বোলিং স্কিলের উন্নতি করতে হবে। হয়তো সময় তেমন পাবো না কিন্তু যতটুকই পাবো ৩০-৪০ মিনিট বা ১ ঘণ্টা, সেটা যেন কাজে লাগাতে পারি। যেমন আজকে অনেকক্ষণ ব্যাটিং করেছি, কালকে ম্যাচ খেলবো পরশু আবার বোলিং করবো, জিম করবো। ম্যাচের ফাঁকে একদিন বা দুইদিন যে বিরতি থাকবে এটাকে ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ বলে আমার কাছে মনে হয়। এটাই কাজে লাগাবো।
বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়ে অবদান রাখা নিয়ে কী ভাবছেন?
আমি বিশ্বাস করি আমাদের দলটা অনেক ভালো এবং বিপদের সময় ২০-৩০টা রান অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটা নিয়েই কাজ করছি, অনেক বড় ইনিংস খেলার সুযোগ হয়ত আমি পাবো না। আমার কাছ থেকে দল আশা করে ২০-৩০-৪০, এমন রান যদি স্কোরবোর্ডে যোগ করতে পারি বা শেষের দিকে একটা জুটি গড়তে পারি তাহলে দলের জন্য অনেক সাহায্য হবে। এটা নিয়েই কাজ করছি শেষের ২০-৩০টা রান কীভাবে করতে হবে। কারণ সে সময় অনেক ভালো বোলাররা বোলিং করেন, ভিন্ন ভিন্ন ফিল্ডিং সেটআপ থাকে। এগুলো নিয়ে এখানে প্রস্তুতি নিচ্ছি, এই পরিস্থিতিগুলা যেন ওইখানে সামাল দিতে পারি। নিউজিল্যান্ডে যখন খেলেছি তখন দেখেছি। ইংল্যান্ড আর নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন অনেকটা একই। তাই আমাকে কোন জায়গায় উন্নতি করতে হবে সেটা নিউজিল্যান্ড থেকে অনেক কিছু ধরতে পেরেছি। দেশে এগুলো কাজে লাগাতে চাই এখন।
এই সময়ের মধ্যে নিজেকে কতটা প্রস্তুত করতে পারবেন বলে মনে করেন?
আমি আগেই যেটা বললাম, প্রিমিয়ার লিগের মাঝামাঝি আমাদের করতে হবে। আমরা আয়ারল্যান্ডে যাচ্ছি, সেখানেও প্রস্তুতির সুযোগ পাবো ইংল্যান্ডেও ১০-১২ দিন সময় পাবো। এই যে, ১৫-২০ দিন সময় পাচ্ছি সেগুলো যদি কাজে লাগাতে পারি তাহলে ভালো ফলাফল আসবে।