ব্রাজিলের কাছে ৫-০ গোলে হেরে বিশ্বকাপ বাছাই শুরু হয়েছে বলিভিয়ার। বিশাল হার, তাতে খেদ নেই কোচ সেজার ফারিহাসের। তিনি এখন আর্জেন্টিনাকে আটকানোর পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৫০০ মিটার উচ্চতায় ফুটবলারদের বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত লা পাজের হার্নান্দো সাইলস স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত ২টায় মেসিদের গুঁড়িয়ে দেয়ার অপেক্ষায় লা ভার্দেরা।
লা পাজে খেলতে গেলে অন্য দলের ফুটবলারদের সবার আগে চিন্তায় আসে নিজেদের ফুসফুস বাঁচানোর কথা। বিশাল উচ্চতার এ শহরে নিজেদের সাধারণ খেলাতো দূরের কথা, অক্সিজেনের অভাবে খেলোয়াড়রা করতে থাকেন হাঁসফাঁস।
ঠিক এই কারণে বলিভিয়ানদের নামে আড়ালে আবডালে ‘ফুসফুসখেকো’ বলে একটা কুখ্যাতি তৈরি হয়ে গেছে! মাঠে খেলা বাদ দিয়ে অক্সিজেন নেয়ার জন্য ফুটবলারদের দৌড়াদৌড়ি এখানে সাধারণ এক বিষয়।
বিষয়টা নিয়ে আগেই ভেবে রেখেছেন সেজার ফারিহাস। ব্রাজিলের কাছে পেরে উঠবেন না জেনেই দলের সেরাদের নিজ শহরে বিশ্রামে রেখে সাও পাওলো খেলতে গিয়েছিলেন। বলিভিয়ান কোচের আসল ভাবনা আর্জেন্টিনাকে ঘিরে। অতীতে এ শহরে আলবিসেলেস্তেদের ৬ গোলে উড়িয়ে দেয়ার রেকর্ড আছে। লোকে যাই বলুক, আবারও তেমন কিছু করার পরিকল্পনা তার।
‘লোকে আমাদের নোংরা বলুক, কিচ্ছু যায় আসে না তাতে। আমরা প্রতিপক্ষের ফুসফুস বের করে আনার অপেক্ষায়।’ আর্জেন্টিনা ম্যাচ নিয়ে এমন হুঙ্কার ছেড়েছেন ফারিহাস।
ম্যাচ নিয়ে দুশ্চিন্তা আছে আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনিরও। রোববারই দলবল নিয়ে লা পাজে গেয়েছেন তিনি, যাতে ম্যাচের আগে অন্তত দুদিন অনুশীলনের সময় পাওয়া যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞান যদিও বলছে, সিদ্ধান্তটা ঠিক হয়নি। লা পাজের কঠিন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে একজন শক্তিশালী মানুষেরও অন্তত তিনদিন সময় লাগে!
ফুটবলারদের ফিটনেস সাধারণত মানুষের চেয়ে অনেকাংশেই উন্নত। এতশত না ভেবে যা হওয়ার হবে চিন্তা করে দুদিন সময় নিয়ে তাই বলিভিয়া গেছেন স্কালোনি। তার আসল ভাবনা এ দুদিনে পরিবেশের সঙ্গে কারা মানিয়ে নিতে পারলেন আর কারা পারলেন না সেটা ভেবেচিন্তে আলাদা একটা দল তৈরি করা। অন্তত পক্ষে ড্র নিয়েও যদি ফেরা যায় সেখান সেটাই হবে জয়ের সমান।
বলিভিয়ায় খেলার পাশাপাশি আর্জেন্টিনার চোখ থাকবে ইকুয়েডর-উরুগুয়ে ম্যাচের দিকেও। লা পাজ ম্যাচ শুরুর এক ঘণ্টা পর কিটোতে সুয়ারেজদের আতিথ্য দেবে ইকুয়েডর। কনমেবল অঞ্চলে যে কয়টা শহরের ম্যাচ খেলোয়াড়দের সর্বস্ব নিংড়ে নেয় কিটো তার একটি।
লা পাজের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উচ্চতার শহরে (সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৮০০ মিটার) পয়েন্ট হারানোর সম্ভাবনা থাকে যেকোনো দলেরই। বলিভিয়া ম্যাচই বলে দেবে, কিটোতে খেলার কতটা সামর্থ্য আছে মেসি আর তার দলের!