জাতীয় ক্রিকেট দলের হেড কোচ নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল হাথুরুসিংহে পদত্যাগের পরপরই। লম্বা সময় চেষ্টা চালিয়েও বাংলাদেশ দলের জন্য উপযুক্ত কোচ খুঁজে বের করতে পারেননি বিসিবি কর্তারা। বর্তমানে কিংবদন্তি ক্রিকেটার ও সফল কোচ গ্যারি কারস্টেনের নির্দেশনা নিয়ে চলছে কোচ নিয়োগের কাজ।
ক্রমেই উন্নতির দিকে ধাবমান বাংলাদেশ দলের জন্য কেমন কোচ দরকার দুদিনের সফরে সবার সঙ্গে কথা বলে সেটি জানার চেষ্টা করেছেন ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানো কোচ কারস্টেন। বাংলাদেশের ক্রিকেট পর্যালোচনা করে হেড কোচের অধীনে লাল ও সাদা বলের জন্য আলাদা ব্যাটিং পরামর্শক নিয়োগ দেয়ার কথাও বলেছেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত সফরে জাতীয় দলের ক্রিকেটার, নির্বাচক, বিকেএসপির সাবেক কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও বিসিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন কারস্টেন। মঙ্গলবার দেশে ফিরে যাওয়ার দিনে কথা বলেছেন নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে। বেক্সিমকো অফিসে দীর্ঘ বৈঠকের পর বিসিবি সভাপতি সংবাদমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেন কারস্টেনের পরামর্শ ও বিসিবির চিন্তা-ভাবনার কথা।
‘আমাদের একজন হেড কোচ থাকবে। আলাদা (ফরম্যাট অনুযায়ী) হওয়াই ভালো। সাদা বল এবং লাল বলের জন্য আলাদা কোচ নিয়োগ দেয়া উচিত। টেস্টটাকে আলাদাভাবে গুরুত্ব দেয়া উচিত। এটা ভিন্ন রকম হতে পারে। অথবা হেড কোচের অধীনে দুই/তিনজন কনসালটেন্ট থাকতে পারে তিনটা ফরম্যাটের জন্য।’
‘খেলাগুলো যেভাবে এগোচ্ছে, একই মানসিকতা চলতে থাকলে হবে না। এখানে বিশেষায়িত বিষয়গুলো সামনে আনতে হবে। আজকে সে চলে যাবে। গিয়েও কাজ করবে। আরও অনেকের ইন্টারভিউ করবে। তার কাছেও কিছু শর্টলিস্টেড কোচ আছে। সে আরও নতুন কিছু কোচের কথা বলেছে। তাদের সঙ্গে অলরেডি যোগাযোগ করেছে।’ যোগ করেন নাজমুল হাসান।
নাজমুল হাসান জানালেন, আগামী মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর হবে হেড কোচের অধীনেই। মাশরাফী-সাকিবরা পাবেন পূর্ণাঙ্গ কোচিং স্টাফ। জাতীয় দলের হেড কোচ ছাড়াও ব্যাটিং পরামর্শক নিয়োগের ব্যাপারটি গুরুত্ব দিচ্ছে বিসিবি। পর্যায়ক্রমে কোচ নিয়োগ দেয়া হবে ‘এ’ দল, এইচপি দল ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলের জন্য।
‘তার (কারস্টেন) সঙ্গে কথা বলে যতদূর ধারণা, আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগে জাতীয় দলের ফুলসেটআপ পাচ্ছি। ২৪-২৫ তারিখের দিকে দল যাবে। এটা হিসেব করে সে আবার আসবে। আমাদের আশা ১৫ জুনের মধ্যে কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারব। ১৫ তারিখের আগেই কোচকে সিদ্ধান্ত দিতে হবে। এরপর আমরা তাদের ইন্টারভিউ নিবো। ওখান থেকে বাছাই করবো। আমাদের নিজেদেরও সিদ্ধান্ত নেয়ার ব্যাপার আছে। আশা করি খুব দ্রুতই হয়ে যাবে।’
কথা ছিল কারস্টেন বাংলাদেশ দলের ‘হেড অব কোচিং’ হিসেবে কাজ করবেন ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত। তার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করার অপেক্ষায় ছিল বিসিবি। কিন্তু প্রোটিয়া সাবেক বাংলাদেশে এসে জানিয়ে দেন আপাতত কোচ নিয়োগের ব্যাপারেই কেবল কাজ করবেন। সাউথ আফ্রিকান তারকা বিসিবির সঙ্গে কীভাবে কাজ করবেন তার ব্যাখ্যাও দিলেন নাজমুল হাসান।
‘গ্যারির সঙ্গে আমাদের বেশকিছু দিন আগে থেকেই যোগাযোগ হচ্ছিল। একটা সময় আমাদের এখানে তাকে ডাইরেক্টার অব কোচেস হিসেবে নিয়ে আসার পরিকল্পনা ছিল। কথা বার্তাতে আমরা অনেকদূর এগিয়েও গিয়েছিলাম। কিন্তু সে ফুলটাইম কাজ করতে ইচ্ছুক ছিল না। আমরা চাইছি ফুলটাইম কোচ, তখন ডাইরেক্টর অব কোচ হয়ে কারস্টেন কি করবে না করবে সেগুলো আলোচনা হয়েছে। ওকে আমাদের কোচ খুঁজে দেয়ার দায়িত্বটা দেই। কিছু আইডিয়া সে দেবে, সেগুলো নিয়ে হয়ত আমরা ভাববো।’