নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের সর্বনিন্ম ইনিংস তো বটেই, গত ৬৫ বছরেও এত কম রানে অলআউট হয়নি কোনো দল। ১১ ব্যাটসম্যানের একজনও দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি, কেবল একটি আনপ্লেয়েবল বল ছাড়া বাকিগুলো আত্মহত্যার জ্বলন্ত নিদর্শন!
একজন অধিনায়ক হিসেবে এমন ইনিংসের সাক্ষী হওয়া কতটা বেদনার সেটা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন বিরাট কোহলি। বেদনাই হোক কিংবা লজ্জা; বুকের ভেতর আটকে থাকা কথাগুলো মুখ পর্যন্ত আনতে পারছেন না ভারত অধিনায়ক।
৬২ রানের লিড, হাতে আছে নয় উইকেট। দারুণ এক দুপুরের স্বপ্ন নিয়ে যখন অ্যাডিলেডের দিবা-রাত্রির টেস্টের তৃতীয় দিনটা শুরু করেছিলো ভারত, কোহলি ভেবেছিলেন কী লজ্জাই সামনে অপেক্ষা করে আছে? হাতের নয় উইকেট খরচ করে দলটা রান তুলতে পারলো ২৬, ৫৩ রানের লিড গিয়ে থামলো ৮৯তে। ম্যাচ শেষ সন্ধ্যা গাড় হবার আগেই, ৮ উইকেটে হেরে।
দলের এমন পরিণতি নিয়ে সাধারণত অধিনায়ক-কোচ ছাড়া কেউই কথা বলতে চান না। বিধ্বস্ত দলের কাপ্তান হিসেবে কোহলিকেই এগিয়ে আসতে হলো। কী যে বলতে হবে সেটাই ভাবতে হলো তাকে।
‘এমন অনুভূতিকে ভাষায় প্রকাশ করার শক্তি নেই। ৬২ রানের লিড নিয়ে খেলতে নামলাম আর পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেলাম।’
‘ড্রেসিং রুমে কারও কথা বলার শক্তি ছিলো না। যখন কেউ দুইদিন কঠোর পরিশ্রম করে একটা ভালো অবস্থানে নিজেকে নিয়ে যায় আর এক ঘণ্টার মধ্যে নিজেরাই এমন পরিস্থিতি তৈরি করে যে যা জেতা অসম্ভব, এটা সত্যিই বেদনাদায়ক। ’
শুধু লজ্জাই নয়, জীবনে আরেকটি প্রথমের শিকার হয়েছেন কোহলি। টস জিতেছেন অথচ ম্যাচ হেরেছেন, অ্যাডিলেডের আগে এমনটা কখনও হয়নি ভারত অধিনায়কের টেস্ট ক্যারিয়ারে। নিজেও এমন একটা বছর পার করলেন যেবার কোনো আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি পেলেন না। ২০০৮ সালে অভিষেকের পর থেকে এক ২০২০ সাল ছাড়া এমন কোনো বছর নেই যে সময়টাতে তিনি সেঞ্চুরি পাননি। সবদিক মিলিয়ে ২০২০ সালকে সত্যি স্মৃতি থেকে ভুলে যেতে চাইবেন টেস্টের দ্বিতীয় সেরা ব্যাটসম্যান!