দেশে করোনায় আক্রান্ত শনাক্তের গ্রাফ আবারও উর্ধ্বমুখী, মৃত্যুর ঘটনাও বাড়ছে। হাসপাতালের সাধারণ বেড ও আইসিইউতে রোগী আবারও সেই একবছর আগের পরিস্থিতিতে ফিরে গেছে। গতবছরের ১৬ জুলাই বেশি রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সেদিন মোট ৩ হাজার ৭৩৩ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল। এরপরে আজ (২৪ মার্চ) আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৫৬৭ জন, যা গত আট মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। নতুন ২৫ জনের মৃত্যুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আট হাজার ৭৬৩ জনে।
করোনার একবছর ঘুরতে ঘুরতে না ঘুরতে এই সংক্রমণ পরিস্থিতি আসলেই উদ্বেগজনক। এর কারণ খুঁজতে শুরু করেছে স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্টরা। তবে বিষয়টি দিনের আলোর মতো পরিস্কার সবার কাছে। দেশের সর্বস্তরে মানা হচ্ছে না যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি। শুধুমাত্র দায়সারাভাবে মাস্ক পরলেও সামাজিক দূরত্ব না মানাসহ নিয়মিত হাত সাবান দিয়ে ধোঁয়া ও স্যানিটাইজার ব্যবহারের অভ্যাস উঠে গেছে বললে ভুল হবে না। এসব কারণেই বাড়ছে করোনার প্রকোপ।
দেশে এখন পর্যন্ত (২৩ মার্চ রাত পর্যন্ত) করোনা ভ্যাকসিন নিতে নিবন্ধন করেছেন ৬৩ লাখ ৭৮ হাজার ৬২৭ জন মানুষ, আর ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন প্রায় অর্ধ কোটি (৪৯ লাখ ৯০ হাজার ২৩২) মানুষ। দেশের মোট জনসংখ্যার তুলনায় এই সংখ্যা খুবই সামান্য। বিশ্বজুড়ে করোনা বিষয়ে গবেষকরা ধারণা করছেন, হাফ ডোজ নেয়া কেউ যদি করোনায় সংক্রমিত হন, তাহলে সেই ভাইরাস ভ্যাকসিন ইমিউনিটির সাথে লড়াই করে যদি আবারও নতুন কাউকে সংক্রমিত করে তাহলে নতুন ধরণের কোনো প্রজাতির জন্ম দিতে পারে। সাউথ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডে যেরকম নতুন প্রজাতি সংক্রমণের ধরণ বদলে নতুন আকার ধারণ করেছে করোনা। বিষয়গুলো খুবই গুরুত্ব সহকারে দেখা দরকার বলে আমরা মনে করছি।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আবারও নতুন করে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হচ্ছে। সে ধারায় অনেকে দেশে আবারও লকডাউনের মতো কড়াকড়ি পরিস্থিতি কামনা করছেন, গতবছরের পুরনো কিছু নিউজ ভাইরাল করে লম্বা ছুটির গুজবও ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে আসলেই কি আরেকটি লকডাউন পরিস্থিতি দেশে সম্ভব? কারণ লকডাউনের মতো পরিস্থিতিতে একটি দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক নানা বিষয়ে যে নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হয়, তার জন্য দেশ কতোটুকু প্রস্তুত তাও ভেবে দেখা দরকার। কিন্তু এটা ঠিক, গণপরিবহনসহ সামাজিক দূরত্ব বজায়ের বিষয় বিধি কড়াকড়িভাবে কার্যকর করা উচিত। তাহলে হয়তো গতবছরের মতো এবছরেও করোনার নতুন ঢেউ সামাল দেয়া যাবে সফলভাবে।