চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

লকডাউনে বাড়ি ফিরতে সবজি ব্যবসায়ী হলেন তিনি!

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে লকডাউনে স্তব্ধ দেশের জনজীবন। এই অবস্থায় কেমন করে মুম্বাই থেকে এ‌লাহাবাদ পৌঁছনো সম্ভব? ২৫ টন পেঁয়াজ কিনুন, হয়ে যান সবজি ব্যবসায়ী। একটি ট্রাকে তা ভর্তি করে ‌নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন পথে।

ভারতের এলাহাবাদের প্রান্তিক স্থানে অবস্থিত নিজের গ্রামে ফিরতে মরিয়া প্রেমমূর্তি পাণ্ডে নামের এক ব্যক্তি এমনই কাণ্ড করে বসলেন।

তিনি মুম্বাই বিমানবন্দরের কর্মী। লকডাউনের প্রথম পর্যায়টা মুম্বাইতেই কাটিয়েছিলেন। কিন্তু এরপরই বুঝতে পারেন, লকডাউন আরও কিছুটা সময় চলবে। তখনই তিনি পরিকল্পনা করেন বাড়ি ফেরার।

এই অবস্থায় বাড়ি ফিরতে অভিনব পরিকল্পনা করেন প্রেমমূর্তি। তিনি জানাচ্ছেন, ‘আমি অনুভব করেছিলাম সরকার কেবল একটা রাস্তাই খোলা রেখেছে। অর্থাৎ এখন যেহেতু পণ্যের সরবরাহে কোনও বাধা নেই, তাই পণ্য কিনে তা বিক্রি করতে চাইলেই তা বাধা ছাড়াই করতে পারবেন।

তিনি কিনে ফেলেন পেঁয়াজ এবং তরমুুজ। এরপর ১৭ এপ্রিল ছোট ট্রাক ভাড়া করেন। ১০ হাজার টাকার তরমুজ কিনে তিনি ট্রাকটি মুুুুুম্বাই পাঠান। ততক্ষণে মুম্বাইয়ের এক বিক্রেতার সঙ্গে চুক্তি হয়ে গিয়েছে তার।

এরপর তিনি বেরিয়ে পড়েন পেঁয়াজের খোঁজে। কিনে ফেলেন ২৫ টনপেঁয়াজ। প্রতি কেজির দাম পড়ে ৯.১০ টাকা। সব মিলিয়ে তাকে দিতে হয় ২ লাখেরও বেশি টাকা।

এরপর ৭৭ হাজার ৫০০ টাকা খরচ করে একটি ট্রাক ভাড়া করে ২০ এপ্রিল রওয়ানা দেন তিনি। গন্তব্য ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার দূরের এলাহাবাদ।

২৩ এপ্রিল তিনি সেখানে পৌঁছে সরাসরি চলে যান ভারতের মুন্দেরা পাইকারি বাজারে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এমন কাউকেই তিনি খুঁজে পাননি যিনি ওই পেঁয়াজ কিনবেন। অগত্যা সব নিয়েই তিনি চলে আসেন তার গ্রাম কোতোয়া মুবারকপুরে। কিন্তু পেঁয়াজ সেখানেও বিক্রি হয়নি।

টিপি নগরের পুলিশ পোস্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত অরবিন্দকুমার সিংহ জানাচ্ছেন, প্রেমমূর্তি ধুমানগঞ্জ থানায় আসেন শুক্রবার। তাকে পরীক্ষা করে মেডিক্যাল টিম। এরপর তাকে ১৪ দিনের জন্য কোয়ারান্টাইনে পাঠানো হয়।

প্রেমমূর্তির আশা, পেঁয়াজগুলি ঠিকই বিক্রি হবে। কেউ না কেউ সেগুলি ঠিকই কিনবেন।

তিনি জানাচ্ছেন, এই মুহূর্তে মধ্যপ্রদেশের সাগর থেকে আসা পেঁয়াজে এখন ভর্তি রয়েছে সেখানকার বাজার। সেটা ফুরোলেই পেঁয়াজের ক্রেতা তিনি পেয়ে যাবেন।