রঙিন পোশাকে দিনের পর দিন পারফর্ম করে চলেছেন সাকিব আল হাসান। সাদা বলে যতটা নিয়মিত, লাল বলে অবশ্য ততটা নিয়মিত খেলা হচ্ছে না। দীর্ঘদিন টেস্ট না খেলায় র্যাঙ্কিংয়ে নেমে যেতে হয়েছে। কয়েকদিন আগেই তাকে পেছনে ঠেলে সেরা অলরাউন্ডারের তালিকার দুইয়ে উঠে গেছেন বেন স্টোকস। বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক যদিও ওঠা-নামা নিয়ে ভাবিত নন! বলছেন, দলের জয়ে অবদান রাখতে পারলে র্যাঙ্কিং আপনি আপনিই বাড়বে।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের সিরিজে বৃহস্পতিবার মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ দিয়েই লম্বা সময় পর সাদা পোশাকে খেলতে নামবেন সাকিব। বুধবার সেই ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বসেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। সেখানে নিজের র্যাঙ্কিং ও দলের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেছেন।
সাকিব সবশেষ টেস্ট খেলেছেন গত বছরের নভেম্বরে। ঢাকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে, বাংলাদেশ ম্যাচটা জিতেছিল ইনিংস ও ১৮৪ রানে। বল হাতে দুই ইনিংসে ৬ উইকেট নেয়ার পাশাপাশি এক ইনিংসে ব্যাট করে ৮০ রান করেছিলেন সাকিব। তারপর আর টেস্ট না খেলায় সবশেষ প্রকাশিত র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে পড়েন।
বুধবার সংবাদ সম্মেলনে উঠে এলো সেই প্রসঙ্গও। যেখানে সাকিব বললেন, ‘আমার মনে একটা জিনিসই কাজ করে, সেটা হল দলের জয়ে কতটুকু অবদান রাখতে পারলাম। সেটা যদি স্বাভাবিক রাখতে পারি, তাহলে র্যাঙ্কিংগুলো আপনা আপনিই বাড়বে। এ কারণে র্যাঙ্কিং নিয়ে আমাকে কখনোই চিন্তা করতে হয় না। সবসময়ই চিন্তা থাকে, দলের প্রয়োজনে যেন ভালো কিছু করতে পারি। সেই ভালোর কিছু সঙ্গে যদি অন্যকিছু (র্যাঙ্কিং) হয়, তাহলে সেটাও ভালো।’
সাকিব কথা বলেছেন টস, পিচ, দলসহ আরও অনেকগুলো বিষয়ে। ঘরের মাঠে খেলা। সেখানে টস একটা ফ্যাক্টর। টস জিতলে কোনো অ্যাডভান্টেজ আছে কি? সাকিবের উত্তর, ‘এশিয়াতে টসটা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ হয়। তাতে অ্যাডভান্টেজ হয়তো একটু থাকবে। কিন্তু, সেটা থাকুক আর নাই থাকুক, গুরুত্বপূর্ণ হল বোলিং বা ব্যাটিংয়ে শুরুটা যেন ভালো করতে পারি।’
শুধু ভালো শুরু করলেই হবে না, সাকিব বলছেন ওই ভালো শুরুটা ধরে রাখতে হবে।
প্রশ্ন ছিল চট্টগ্রামের পিচ নিয়েও। বন্দরনগরীর পিচ কেমন হতে পারে? সাকিব জানালেন, ‘চট্টগ্রামের পিচ উপরে যেমনটা দেখা যায়, অধিকাংশ সময়ই তেমন হয় না। সুতরাং আমরা ওপেন মাইন্ডে আছি, পিচ যে ধরনেরই হোক না কেনো, আমরা সেটা সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করব। সেটা যদি করতে পারি, তাহলে আমরা ভালো কিছু করতে পারব।’
পেস আক্রমণে দীর্ঘদিন ভুগছে বাংলাদেশ। স্পিনেও যথেষ্ট লড়তে হয় সাফল্য আনতে। টেস্টে প্রতিপক্ষকে দুবার অলআউট করতে না পারার মাশুল গুনতে হয় হরহামেশাই। সাকিব তাই দলের বোলিং নিয়ে সামর্থ্য ও প্রয়োগ ক্ষমতার সমন্বয়ের কথাই টেনে আনলেন।
‘দলে যত ভালো বোলিংই থাক না কেনো, যতক্ষণ না ২০ উইকেট নিতে পারছি, জেতার সুযোগ নাই। সেইসঙ্গে ব্যাটসম্যানদের চিন্তায় থাকবে, বোলাররা প্রতিপক্ষকে যত কম রানে অলআউট করতে পারে এবং তারা যত বেশি লিড এনে দিতে পারেন। এরচেয়ে বেশি কিছু চিন্তা করছি না। আমাদের মূল কাজ হল বেসিক কাজগুলো ঠিকঠাকভাবে করা।’
নিজের দলের সঙ্গে প্রতিপক্ষের বিষয়েও সতর্ক করেছেন সাকিব। আফগানিস্তান দলে কোয়ালিটি সম্পন্ন বেশ কয়েকজন স্পিনার রয়েছেন। সেইসঙ্গে তাদের পেস আক্রমণও বেশ শক্তিশালী। ব্যাটিংয়েও লম্বা সময় ক্রিজে থাকার ব্যাটসম্যান রয়েছেন। ব্যাটিং-বোলিং উভয় দিক থেকেই বাংলাদেশ যে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে, সেটাই মনে করিয়ে দিয়েছেন টাইগার টেস্ট দলপতি।