মিয়ানমার রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো জাতিগত নিধনের সংবাদ সংগ্রহে অনুসন্ধানের সময় রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে আটক বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কারাদণ্ড প্রাপ্ত দুই সাংবাদিকের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে স্কুল, যুব সাংবাদিক ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট।
রোববার মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীসহ শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন অংশ নেয় তারা। এসময় প্রতিবাদকারীরা সাজা প্রাপ্ত দুই সাংবাদিকের মুক্তির দাবিতে স্বাক্ষর অভিযানসহ স্লোগান দিতে থাকেন।
দণ্ড পাওয়া বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিক হলেন- ওয়া লোন এবং কিয়াও সোয়ে উ।
আন্দোলনের সময় প্রতিবাদকারীদের পুলিশ পাহারায় রাখলে তারা কালো বেলুনে ‘ওয়া লোন এবং কিয়াও সোয়ে উ’কে মুক্তি দাও’ স্লোগান লিখে প্রতিবাদ করেন।
এ বিষয়ে তারা জাতিসংঘের সিনিয়র কর্মকর্তা ও যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এবং মানবাধিকার সংস্থার প্রতি সাংবাদিকদ্বয়ের দ্রুত মুক্তির জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এ দিকে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অং সান সুচি গত সপ্তাহে এক অনুষ্ঠানে বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতার সঙ্গে এই মামলার কোন সম্পর্ক নেই। তাদের দুইজনকে দণ্ড দেয়া হয়েছে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন ভঙ্গের অভিযোগে, তারা সাংবাদিক এই জন্য নয়।
মিয়ানমারের সাংবাদিক সংস্থার এক বিবৃতি দেশের নেতাদের সমালোচনা করে বলা হয়, ‘সুচির এই মতামতে আমরা হতাশ।’
প্রতিবাদকারীরা হত্যা কখনো রাষ্ট্রীয় গোপন বিষয় হতে পারেনা বলে স্বাক্ষর অভিযান শুরু করেছে। সত্য প্রকাশ কখনো অন্যায় হতে পারেনা। এ সময় তারা মিয়ানমার আর্মি এবং সুচির অবস্থান নিয়ে নাটিকা পরিবেশন করেন।
প্রতিবাদকারীরা বলেন, সাংবাদিকদের জানা দরকার পৃথিবীর কোথায় কি ঘটছে। আমাদের সাংবাদিকদের প্রয়োজন আছে, কান ও চোখ ছাড়া মানুষ যেমন নির্বোধ হয়ে যায় সাংবাদিকদের ছাড়া আমরাও তা হয়ে যাবো।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর ইয়াঙ্গুনের একটি রেস্টুরেন্ট থেকে তাদেরকে আটক করে মিয়ানমার পুলিশ। ওই সময় তাদের কাছে কিছু সরকারি নথিপত্র ছিল যা পুলিশই অনুসন্ধানের সময় তাদের দিয়েছিল।
গ্রেপ্তারের পর দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইনে অভিযোগ এনে তাদের ৭ বছরের সাজা প্রদান করে দেশটির একটি আদালত।
কারাদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণার পরও আগের মতোই নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন ওয়া লোন এবং কিয়াও সোয়ে উ। তাদের দাবি, পুলিশ তাদেরকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়েছে।