মঙ্গলবার থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার অনেক কাজই বাকি রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আবার অনেক রোহিঙ্গা স্বদেশে ফিরতে আগ্রহী নয়।
তবে বাংলাদেশ প্রত্যাবাসন নিয়ে প্রস্তুতিমূলক কাজ দ্রুত গতিতে চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী, ২৩ জানুয়ারি থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরুর কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। এখন প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় ধাপের কাজ চলছে। তৃতীয় পর্যায়ে তাদের ফিরিয়ে দেয়া শুরু হবে।
নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে ১৫ জানুয়ারি মিয়ানমারের নেপিডোতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে চুক্তি হয়।
তবে উখিয়া টেকনাফের অন্থায়ী ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা প্রত্যাবাসনের পূর্বে নাগরিকত্ব, ক্ষতিপুরণসহ ৫টি দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছে। এসব দাবি পুরণ হলে নিজ দেশে ফেরার কথা বলছেন তারা।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মানবিক পরিস্থিতি সরেজমিন দেখতে উখিয়া এবং টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্প ৩দিন ধরে পরিদর্শন করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার বিশেষ দূত ইয়াং হি লি।
প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় ধাপে কাঠামোগত ব্যবস্থা তৈরির কাজ চলছে বলে জানান রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবাসন কর্মকর্তারা।
সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত যাচাই-বাছাই কারিগরি (টেকনিক্যাল) কমিটির আহ্বায়ক এবং কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরনার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম জানান, ‘মঙ্গলবার কোন ভাবেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কাজ শুরু করা সম্ভব নয়। চুক্তি মতে, প্রথম পর্যায়ে পদ্ধতিগত বিষয় ঠিক হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে এখন চলছে কাঠামোগত ব্যবস্থা তৈরির কাজ। তারপর তৃতীয় পর্যায়ে শারীরিক প্রত্যাবাসন শুরু করা সম্ভব হবে। এটার জন্য আরো কিছু সময় লাগবে।’
তবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হবেই। প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত জরুরি কাজগুলো গুছিয়ে নেওয়ার পর যে কোন সময়ই তা শুরু করা সম্ভব হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নতুন পুরাতন মিলে এ পর্যন্ত ১০ লাখ ৭৫ হাজার রোহিঙ্গার নিবন্ধন হয়েছে। কক্সবাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার জানিয়েছেন, ২৫শে আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ৬ লাখ ৭৫ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে।