রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে (আইসিজে) মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে গাম্বিয়া। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে এরই মধ্যে আইনজীবীদের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
নেদারল্যান্ডসের হেগে ‘রোহিঙ্গাদের জন্য বিচার এবং জবাবদিহিতা’ শীর্ষক সেমিনারে গাম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল এবং বিচারমন্ত্রী আবুবাক্কার এম তামবাদু এ কথা বলেন।
শুক্রবার হেগের ইরাসমাস ইউনিভার্সিটিতে ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোস্যাল স্টাডিজ এই সেমিরারের আয়োজন করে। এর সহ-আয়োজক ছিল এশিয়া জাস্টিস কোয়ালিশন এবং বাংলাদেশের ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রার অব পিস অ্যান্ড জাস্টিস।
গাম্বিয়ার বিচার মন্ত্রণালয়ের আইন বিভাগ আইসিজেতে এই মামলা করবে। এটিই হবে আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে প্রথমাবেরর মতো মিয়ানমারকে অভিযুক্ত করার প্রথম ঘটনা।
সেমিনারে তামবাদু বলেন, আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে এই মামলা করার জন্য গত ৪ অক্টোবর আমি আইনজীবীদের নির্দেশনা দিয়েছি।
‘‘আমি যখন কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে যাই, তখন দূর থেকেই গণহত্যার দুর্গন্ধ পেয়েছি আমি। রুয়ান্ডায় চালানো গণধর্ষণ, হত্যা এবং গণহত্যার এক দশক পর রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো গণহত্যার এই দুর্গন্ধ আমার কাছে পরিচিতই মনে হয়েছে।’’
তিনি বলেন, নুরেমবার্গ ট্রায়ালে করা ‘‘আর কখনই না’’ প্রতিজ্ঞার ৭৫ বছর পর মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো অপরাধ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যর্থতারই চিত্রায়ণ।
রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত অপরাধের জন্য মিয়ানমারকে জবাবদিহি করার প্রয়োজনীয়তার কথা সেমিনারে তুলে ধরেন মিয়ানমারে নিযুক্ত কানাডার বিশেষ দূত বব রাই।
ওই সেমিনারে বিভিন্ন দেশের ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী এবং রোহিঙ্গা নেতাসহ শতাধিক ব্যক্তি আলোচনায় অংশ নেন।