রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে হত্যার ঘটনা এতদিনের শঙ্কার বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে। এমন একটি সংকট দীর্ঘদিন অমীমাংসিত থাকলে তার ফল যে শুভ হয় না সেটাই আবার প্রমাণ হলো।
এমন প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অস্থিরতার বিষয়ে সরকারকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। মিয়ানমার কিংবা অন্য কোনো দেশের গোয়েন্দা সংস্থা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তৎপর থাকতে পারে বলেও তাদের আশঙ্কা। এই আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না। এজন্য ক্যাম্পগুলোতে গোয়েন্দা নজরদারি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর কঠোর অবস্থান নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীদের দ্বারা জাতিগত নিধনযজ্ঞের শিকার হওয়ার পর থেকেই সংকট শুরু। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়। কিন্তু এরপর থেকেই যেন বিশ্বনেতারা চুপসে গেছেন। কোনো এক অজানা কারণে মিয়ানমারকে তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাধ্য করতে পারছেন না।
সেই সংকটের শুরু থেকেই আমরা বলে আসছিলাম যে, দীর্ঘদিন রোহিঙ্গা সংকট ঝুলন্ত অবস্থায় থাকলে সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকি বাড়বে। এ ঝুঁকি যে শুধু বাংলাদেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে তা নয়। দক্ষিণ এশিয়াসহ পুরো বিশ্বেই এর প্রভাব পড়বে। রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের মধ্যদিয়ে সেই শঙ্কাই বাস্তব হলো। অবশ্য এর আগে থেকেই ক্যাম্পগুলোতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলমান ছিল।
জাতিসংঘের সর্বশেষ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে উদ্যোগ নিতে আহ্বান করেছেন। এই ইস্যুতে বরাবরের মতো আমরা বলতে চাই, মিয়ানমারের সৃষ্ট সমস্যা মিয়ানমারকেই সমাধান করতে হবে। রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমি মিয়ানমারে যেকোন মূল্যে ফেরাতে হবে। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেই জোরালো ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। এরমধ্যে কেউ যেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্থিরতা তৈরি করতে না পারে, সেজন্য ক্যাম্পগুলোতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধিসহ কঠোর অবস্থান নিতে আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।