মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গারা দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে আসার সময় সঙ্গে নিয়ে আসছে তাদের প্রয়োজনীয় শুকনো খাবার , কাগজপত্র, জমির দলিল, লাইট, মোবাইল, মেমরি কার্ড, এমনকি পশুপাখিও। কিছু মূল্যবান জিনিস বস্তায় নিয়ে, বাঁশের ঝুড়িতে, কেউ নদী পথে আবার কেউ বন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে পায়ে হেঁটে পালিয়ে আসছে বলে জানিয়েছে এপি সংবাদ সংস্থা।
ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আত্মীয় স্বজনদের খুঁজে বেড় করতে তারা তাদের মোবাইল ফোন নিয়ে আসছে । তাবুতে জ্বলতে দেখা যায় ছোট ছোট সোলার লাইট। একটি মেয়েকে দেখা যায় কাধে একটি সোলার লাইট নিয়ে নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এমনিই একজন রোহিঙ্গা বলেন, আমরা অন্ধকার দেখেছি এখন একটু আলো চাই।
প্লাস্টিকের ব্যাগে মোবাইল ফোন নিয়েও তারা চলে আসছে। আবার যারা মোবাইল নিয়ে আসতে পারেনি তারা মেমোরি কার্ড নিয়ে আসছে। অনেকেই বলছে, তারা তাদের নিজস্ব ছবি, ভিডিও মুছে ফেলছে কারণ মিয়ানমার বাহিনীর কবলে পড়লে তাদের দিয়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের খুঁজে বের করবে।
খাদ্য সংকট প্রবল রয়েছে শরণার্থী শিবির গুলোতে। দাতা সংস্থাগুলো যততক্ষণ খাবার না দেয়, ততক্ষণ অনেকেই না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। তারপরও অনেকেই মসলা, মরিচ, শুকনো খাবার আনতে ভুল করেনি। অনেকে আবার আসার সময় সঙ্গে নিয়ে এসেছেন তাদের হাঁস, মুরগি, গরু , ছাগল।
পালিয়ে আসার সময় তারা জাতীয় পরিচয়পত্র, স্কুলের পরিচয়পত্র, এবং তাদের দাদাদের আদিবাস যে মিয়ানমারে ছিলো সেই সব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গে করে নিয়ে এসেছে। এক পরিবারকে দেখা যায় এক একর জমির দলিল সঙ্গে করে নিয়ে আসতে। যে জমিটি তারা ১৯৯৪ সালে ক্রয় করেছিলো। তারা যাতে মিয়ানমারে আবার ফিরে যেতে পারে, এই প্রত্যাশায় এসব কাগজ সঙ্গে নিয়ে এসেছে বলে ঐ পরিবারের বরাত দিয়ে জানিয়েছে এপি।
গত দুই সপ্তাহ আগে সংহিসতার শিকার হয়ে তারা রাখাইন রাজ্য ছেড়ে অনাহারে ক্লান্তদেহ নিয়ে আতঙ্ক নিয়ে বাংলাদেশে পাড়ি জমায় রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গাদের দাবি মিয়ানমার সরকারি বাহিনী ও বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তাদের গ্রাম পুড়িয়ে দেয় । মিয়ামান সরকারের তথ্য মতে, ২৫ তারিখের সংঘরষে প্রায় ৪০০ জন নিহত হয়। জাতিসংঘের তথ্য মতে সহিংসতার পর ২ লাখ ৭০ হাজারের উপরে রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে।