ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দ্রুত ও নিরাপদ প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে কাজ করছে ভারত। সেজন্য ইতোমধ্যে রাখাইন রাজ্যে আড়াই শতাধিক বসতবাড়ি নির্মাণ করছে ভারত। যার কাজ প্রায় শেষ। এছাড়া মুংড়ুর কিং সাং নামের গ্রামে ৫০ টি বাড়ির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। এসব বাড়ি নির্মাণের অর্থ হচ্ছে উৎখাত হওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সহায়তা করা।
সোমবার দুপুরে উখিয়ার বালুখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানবিক সহায়তা হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, ‘ভারত বাস্তুচ্যুত মানুষের দুঃখ দুর্দশা বুঝতে পারে। তাদের সহায়তায় বাংলাদেশের প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়। এই বাস্তুচ্যুত মানুষের সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশের পাশে থাকতে ভারত মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখবে।’
তিনি আরো বলেন, ভারত প্রয়োজনের সময় সর্বদা বাংলাদেশের পাশে থেকেছে। আমাদের দু’ দেশের সম্পর্কের ভিত্তি বিশ্বাস, বন্ধুত্ব, শহীদের আত্মত্যাগ কিংবা যেকোনো কৌশলগত সম্পর্কের ঊর্ধ্বে। বন্ধুত্বের চেতনায় ভারত বাংলাদেশের বোঝা হালকা করতে এগিয়ে এসেছে, ভবিষ্যতেও আসবে।
হাইকমিশনার আরো বলেন, ‘গেল এক বছরে মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হওয়া প্রায় ১০ লাখ মানুষকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে। এই মানবিক আচরণ ভারত ও সংশ্লিষ্ট সকলের প্রশংসিত অর্জন করেছে। বাংলাদেশের প্রতিবেশী বন্ধু ও অংশীদার হিসেবে বাস্তুচ্যুত মানুষের ঢল শুরু হওয়ার মুহূর্ত থেকেই বাংলাদেশের পাশে ছিল ভারত। এরই ধারাবাহিকতায় তৃতীয়বারের মত বাংলাদেশকে ১ বিলিয়ন লিটার সুপার কেরোসিন তেল এবং ২০ হাজার কেরোসিন স্টোভ ত্রাণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে।’
ত্রাণ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, দুর্যোগ ও ত্রাণ সচিব মো. শাহ কামাল, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সভাপতি হাফিজ আহমেদ মজুমদার, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির মহাসচিব ফিরোজ সালাউদ্দিন এবং ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব বিক্রম দোরাইস্বামী প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শেষে ২৫০ রোহিঙ্গার মধ্যে কেরোসিনতেল ও স্টোভ বিতরণ করা হয়।