চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

রোনালদোর নিষেধাজ্ঞায় রিয়ালের আশীর্বাদ!

অফিসিয়ালি এটা নিশ্চিত হয়ে গেছে রিয়ালের হয়ে সামনের পাঁচটি ম্যাচ মিস করবেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। স্প্যানিশ সুপার কাপের প্রথম লেগে বার্সেলোনার বিপক্ষে জেতা ম্যাচে লাল কার্ড দেখা ও রেফারিকে ধাক্কা দেয়ায় নিষিদ্ধ হয়েছেন তিনি। এই নিষেধাজ্ঞা রিয়ালের জন্য খারাপ হতে পারে, আবার ছদ্মবেশে লস ব্লাঙ্কোদের জন্য এটি আশীর্বাদও হতে পারে!

কনফেডারেশনস কাপে পর্তুগালের হয়ে খেলার পর গ্রীষ্মের শুরুতে দলের সতীর্থদের সঙ্গে বেশ কিছুদিন পরে অনুশীলনে ফেরেন রোনালদো। অনুশীলন করলেও ফিটনেস সমস্যার কারণে উয়েফা সুপার কাপের ফাইনালে খেলতে পারেননি তিনি। তারপরও স্কোপজে থেকে শিরোপা জিতে ফেরে তার দল।

বার্সেলোনার বিপক্ষে বোরবারের ম্যাচেও শুরুর একাদশে ছিলেন না রোনালদো। দ্বিতীয়ার্ধে নেমে একটি গোল করলেও বেশিক্ষণ মাঠে থাকতে পারেননি। দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের খাঁড়ায় পরে তাকে মাঠ ছাড়তে হয়।

ম্যাচ শেষে রোনালদোর বিরুদ্ধে রিপোর্ট দেন রেফারি। যে অপরাধ তিনি করেছেন, তার শাস্তি ৪ থেকে ১২ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু লা লিগা কর্তৃপক্ষ সোমবার তাকে ৫ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এর ফলে বার্সার বিপক্ষে সুপার কাপের দ্বিতীয় লেগসহ লা লিগার ম্যাচে লা করুনা, ভ্যালেন্সিয়া, লেভান্তে এবং রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে খেলতে পারবেন না।

দুই গোলে এগিয়ে থেকেই ঘরের মাঠে বুধবার পরের লেগে বার্সেলোনার মুখোমুখি হবে রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচে রোনালদো না থাকলেও ট্রফি জিততে জিদানের দলই ফেভারিট। কারণ জিজুর রিজার্ভ বেঞ্চে প্রচুর বিকল্প রয়েছে। তার উপর নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে এই ম্যাচে দলে ফিরছেন মিডফিল্ডার লুকা মডরিচ। শুরুর একাদশে নিশ্চিতভাবেই জায়গা পাচ্ছেন ন্যু ক্যাম্পে দুর্দান্ত এক গোল করা মার্কো আসেনসিও।

রোনালদোর নিষেধাজ্ঞার খবর আসার পর কোচ জিদান বলেছেন, ‘বুধবার তাকে (রোনালদো) ছাড়াই আমরা জেতার চেষ্টা করব। এই পরিকল্পনায় আমরা কোনও পরিবর্তন আনব না। এমনকি আমরা যদি ১০ জনের দলেও পরিণত হই, তবু শেষ পর্যন্ত ভরসা রাখব।’

রিয়ালের বিপক্ষে ঘরের মাঠে রীতিমত হাঁপিয়েছে বার্সা। নেইমার চলে যাওয়ার পর তার বিকল্প এখনও খাঁড়া করতে পারেনি কাতালানরা। এই দিক থেকে হিসাব করলেও বার্নাব্যুতে রোনালদোর অভাব খুব একটা অনুভব করবে না রিয়াল।

সুপার কাপের ম্যাচ ছাড়া বাকি চারটি ম্যাচও রোনালদোকে ছাড়া ভালভাবেই সামলাতে পারবে রিয়াল। চার ম্যাচের মধ্যে লা করুনা প্রতিপক্ষ হিসাবে কখনোই তেমন শক্তিশালী না। এরপর ঘরের মাঠে লেভান্তেকে সামলাতে খুব একটা কষ্ট হওয়ার কথা নয় জিদানের শিষ্যদের।

বাকি দুই ম্যাচে যা একটু পরীক্ষার মুখে পড়তে হতে পারে। ভ্যালেন্সিয়ার মাঠে খেলা হওয়ায় পরীক্ষার ব্যাপারটা একটু বেশিই আসছে। একই রকম প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হতে পারে রিয়াল সোসিয়েদাদের সামনেও। তারপরও মাদ্রিদ রোনালদোকে ছাড়া অনেক শক্তিশালী হবে।

এই সময়ের বিরতি চারবারের ব্যালন ডি’অর জয়ীর জন্যও উপকারীই হবে। গত মৌসুম শেষে রোনালদোকে সতেজ রাখতে পুরো সময় বিশ্রামে রেখেছেন জিদান। নিজের ফিটনেস ফিরে পেতে এখন আরও বেশি সময় পাবেন সিআর সেভেন। এক কথায়, এটা তার জন্য পারফেক্ট প্রাক-মৌসুম।

নিষেধাজ্ঞা শেষে ২০ সেপ্টেম্বর রিয়াল বেটিসের বিপক্ষে লা লিগা ম্যাচে ফিরতে পারেন রোনালদো। তবে রিয়াল বেটিস ম্যাচের আগেও মাঠে ফিরতে পারেন। নিষেধাজ্ঞা যেহেতু ঘরোয়া টুর্নামেন্টে তাই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ম্যাচ দিয়ে আগে ভাগেই মাঠে নামতে পারেন তিনি। সেপ্টেম্বরের ১২ ও ১৩ তারিখে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ম্যাচ আছে রিয়ালের।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মাঠে নামলেও এক মাস বিরতি পাবেন রোনালদো। এক মাসের বেশি সময় বিশ্রাম নিয়ে পর্তুগীজ যখন ফিরবেন, তখন নিশ্চয় অনেক বেশি সতেজ আর শক্তিশালী হয়েই ফিরবেন। এর মধ্যে রিয়ালও দেখাবে যে, জয়ের জন্য রিয়াল এখন আর শুধু রোনালদোর উপর নির্ভরশীল না। ফলে রিয়ালের জন্য একের ভেতর দুই লাভ।

যদিও মৌসুমে এক মাসের জন্য যোগ্যতম একজন খেলোয়াড়কে হারানোটাকে ঘা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, তারপরও রোনালদোর পাঁচ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা আসলে মাদ্রিদের জন্য দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক বা আশীর্বাদই হতে পারে বলে মত বিশ্লেষকদের।

রোনালদো আবার আপিলও করতে পারবেন ১০দিনের মধ্যে। তাতে নিষেধাজ্ঞা কমে গেলে তো কথাই নেই!