মিয়ানমারের রাখাইনে গণহত্যার পর বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু হচ্ছে আগামী ২২ জানুয়ারি। তাদেরকে ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুতি শুরু করেছে দেশটি।
মিয়ানমারের একজন অভিবাসন কর্মকর্তা জানায়, বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে আনতে দুটি অভ্যর্থনা কেন্দ্র ব্যবহার করা হবে।
সামনের সপ্তাহে ‘টাং পিও লেট’ ওয়ে গ্রাম এবং ‘নাগা খু ইয়া’ গ্রামে সেবা কেন্দ্র বসানো হবে বলে জানিয়েছে মিয়ানমারের শ্রম মন্ত্রণালয়।
মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ, ত্রাণ ও পুনবার্সন মন্ত্রী মিয়াত আয়ে বলেন, আমরা যা চুক্তি করেছি সে হিসেবেই ২২ জানুয়ারি রোহিঙ্গা মুসলিমদের ফিরিয়ে আনা হবে।
দেশটির ইমিগ্রেশন এবং জনসংখ্যার স্থায়ী সচিব মিন্ট ইয়াং বলেন, এরই মধ্য রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নথিপত্র যাচাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কিছু কর্মকর্তাদের।
মিয়ানমারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা রোহিঙ্গা শরণার্থীর তালিকা বাংলাদেশে পাঠানো হয়েচে। তবে বাংলাদেশ থেকে এখনও কোন পূর্ণাঙ্গ তালিকা পাঠানো হয়নি।
তালিকা ফর্মের নিয়ম অনুযায়ী, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা মিয়ানমারের সাবেক বাসিন্দা এই বিষয়টা প্রমাণ করতে হবে এবং অক্টোবরের ৯ তারিখের মধ্যে তারা বাংলাদেশে এসেছিল সেটাও জানাতে হবে।
জাতিসংঘের পক্ষে বলা হয়েছে, এটা এখনও স্পষ্ট নয় যে, রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুরা রাখাইন রাজ্যে ফিরে যেতে চায় কিনা, কারণ মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ‘জাতিগত শুদ্ধি অভিযানের’ নামে রোহিঙ্গাদের ধর্ষণ, হত্যাকাণ্ড এবং নির্মম অত্যাচারের মত ঘটনা ঘটিয়েছে।
দমন-পীড়নের শিকার হয়ে বিগত চার মাসে সাড়ে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। তার আগে থেকেই চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আছে।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। নিষ্ঠুর নিপীড়নের ভয়াবহ চিত্র আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর গোটা বিশ্বের বিবেকবান মানুষ স্তম্ভিত হয়ে পড়েন।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয় মিয়ানমার।