চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

রূপপুর প্রকল্প: ‘অস্বাভাবিক’ মূল্যের তদন্ত প্রতিবেদন চাইলেন হাইকোর্ট

রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন গ্রিন সিটি আবাসন পল্লীর বিভিন্ন আসবাবপত্র ক্রয় এবং তা ফ্ল্যাটে তুলার অস্বাভাবিক মূল্যের বিষয়ে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর হাইকোর্ট বেঞ্চ জনস্বার্থে করা এসংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন।

সেই সাথে আদালত আসবাবপত্র ক্রয় এবং তা ফ্ল্যাটে তুলার অস্বাভাবিক মূল্যের বিষয়ে জুডিশিয়াল ইনকোয়ারি চেয়ে করা রিটের শুনানি ষ্ট্যাণ্ডওভার (মুলতবি) করেছেন।

এসময় আদালত বলেছেন: যেহেতু এ বিষয়টি তদন্ত করে ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে গৃহায়ন ওগণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর, সেহেতু আমারা আগে ওই দুটি রিপোর্ট দেখি। আর সেই পর্যন্ত রিটটি ষ্ট্যাণ্ডওভার (মুলতবি) রাখছি।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সাম্প্রতিক সময়ে সমাজের নানা অসংগতি নিয়ে ফেসবুক লাইভে আসা আলোচিত ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন আ্যটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি আ্যটর্নি জেনারেল আমাতুল করিম।

এর আগে পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প এলাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার জন্য নির্মাণাধীন গ্রিন সিটি আবাসন পল্লীর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনা ও তা ভবনে তোলায় অনিয়ম নিয়ে গত ১৬ মে দৈনিক দেশ রূপান্তর ‘কেনা-তোলায় এত ঝাঁজ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের থাকার জন্য গ্রিন সিটি আবাসন পল্লীতে ২০ তলা ১১টি ও ১৬ তলা আটটি ভবন হচ্ছে। এরই মধ্যে ২০ তলা আটটি ও ১৬ তলা একটি ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। ২০ তলা ভবনের প্রতিটি ফ্ল্যাটের জন্য প্রতিটি বালিশ কিনতে খরচ দেখানো হয়েছে পাঁচ হাজার ৯৫৭ টাকা। আর ভবনে বালিশ ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ৭৬০ টাকা। প্রতিটি রেফ্রিজারেটর কেনার খরচ দেখানো হয়েছে ৯৪ হাজার ২৫০ টাকা। রেফ্রিজারেটর ভবনে ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ১২ হাজার ৫২১ টাকা। একেকটি খাট কেনা দেখানো হয়েছে ৪৩ হাজার ৩৫৭ টাকা। আর খাট ওপরে ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ১০ হাজার ৭৭৩ টাকা।

প্রতিটি টেলিভিশন কেনায় খরচ দেখানো হয়েছে ৮৬ হাজার ৯৭০ টাকা। আর টেলিভিশন ওপরে ওঠাতে দেখানো হয়েছে ৭ হাজার ৬৩৮ টাকার খরচ। বিছানার খরচ ৫ হাজার ৯৮৬ টাকা দেখানো হয়েছে; তা ভবনে তুলতে খরচ দেখানো হয়েছে ৯৩১ টাকা। প্রতিটি ওয়ারড্রোব কিনতে খরচ দেখানো হয়েছে ৫৯ হাজার ৮৫৮ টাকা। আর তা ওঠাতে দেখানো হয়েছে ১৭ হাজার ৪৯৯ টাকার খরচ। এরকম বৈদ্যুতিক চুলা, বৈদ্যুতিক কেটলি, রুম পরিষ্কারের মেশিন, ইলেকট্রিক আয়রন, মাইক্রোওয়েভ ইত্যাদি কেনাকাটা ও ভবনে তুলতে অস্বাভাবিক খরচ দেখানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন পত্রিকার এই প্রতিবেদনট যুক্ত করে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিটটি করেন। গ্রিন সিটি আবাসন পল্লীর বিভিন্ন আসবাবপত্র ও তা ওঠাতে অস্বাভাবিক মূল্যের বিষয়ে জুডিশিয়াল ইনকোয়ারি চাওয়া হয়।