প্রথম ১২ ওভারে ৭২। ২৫ ওভারে ১১৬। পরের ২৫ ওভারে ১০৫। মোট ২২১। শুরুর মতো পরে আর রান বাড়েনি মোস্তাফিজ, রুবেলের কারণে।
এই সিরিজে নিজের শুরুর সময়ের কথা মনে করিয়ে দেয়া মোস্তাফিজ এখন আরও পরিণত ‘ফিঙ্গার স্পিনার’। স্পিনারদের মতো বল গ্রিপ করছেন। ছাড়ার সময় আঙুলের ব্যবহার করছেন।
প্রথম ৮ ওভারে ১৯ রান দিয়ে এক উইকেট পান। ৪৮ বলের ৩০টি ডট গেছে। পরের দুই ওভারে ১০ রান দেন। উইকেট আরও একটি।
রুবেল হোসেন এখন শুধু আর গতির ওপর নির্ভর করছেন না। সুইংয়ে মুগ্ধ করেছেন। সঙ্গে মাপা বাউন্সার।
রুবেল প্রথম ৮ ওভারে ২৮ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন। ডট বল করেছেন ২৬টি। পরের দুই ওভারে ২০ রান দিয়ে আরও দুই উইকেট।
অথচ শুরুতে বাংলাদেশের অবস্থা সম্পূর্ণ বিপরীত ছিল। লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা কখনো বাউন্ডারি, কখনো সিঙ্গেল নিয়ে টাইগার পেসারদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। শারীরিক ভাষায়ও ফুটে উঠছিল ব্যাকফুটে যাওয়ার চিত্র।
প্রথম ২৫ ওভারে শ্রীলঙ্কা বাউন্ডারি এবং ওয়াইড থেকে রান তোলে ৬৩। বাকি ৫১ রান নেয় সিঙ্গেল থেকে! শুরুতে বেশ আক্রমণাত্মক ছিল তারা। কুশল মেন্ডিস এক প্রান্তে মারমুখী অবস্থান নেন। ৯ বলে ২৮ করে মাশরাফীর বলে কাটা পড়েন। এরপরই সিঙ্গেলে মন দেয় দলটি।
প্রথম ১৮ ওভারে মাশরাফীর বোলিং ব্যবহার নিয়ে ধারাভাষ্যকক্ষ থেকে বারবার প্রশ্ন তুলছিলেন ধারাভাষ্যকাররা। মিরাজকে নিয়ে তিনি প্রথম ১২ ওভার চালিয়ে যান! এই সময়ে দুজন ৫০টির কাছাকাছি ডট বল দিলেও লুস বলগুলোয় পার পাননি। ওই ১২ ওভারে লঙ্কানরা দুই উইকেট হারালেও ৭২ রান তুলে ফেলে। অবাক করার বিষয় হল ২৪ ওভার পর্যন্ত সাকিবকে ব্যবহার করেননি অধিনায়ক। হয়তো শেষ দিকে বল করানোর পরিকল্পনা ছিল। সেটা করতে যেয়ে শুরুতে রান বেরিয়ে যায় অনেক।
সাকিব শেষ পর্যন্ত বাঁহাতের কনিষ্ঠ আঙুলের ইনজুরিতে পরে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন। ফিল্ডিং করার সময় মাটিতে ঘষা লেগে আঙুলে মারাত্মক চোট লাগে। মাশরাফীর ইশারা দেখে মনে হয়েছে আঙুলটি ভেঙে গেছে। পরে হাসপাতালে নিতে হয়েছে। তার ব্যাট করা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিসিবির ডাক্তাররা।
শ্রীলঙ্কার ওপেনার উপুল থারাঙ্গা ৯৯ বলে ৫৬ করেন। তাকে আর বাড়তে দেননি ওই ফিজ। বিপজ্জনক হয়ে ওঠার আভাস দেয়া ডিকেভেল্লাকে ফেরান সাইফউদ্দিন। ৫৭ বলে ৪২ করেন তিনি।
মাশরাফী-মিরাজের প্রথম স্পেলের বড় সাফল্য কুশল মেন্ডিসকে ফেরানো। ৯ বলে ২৮ করা কুশল দুটি চার, তিনটি ছয় হাঁকান। স্ট্রাইকরেট ছিল ৩১১.১১।
বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফী তাকে ফেরান ষষ্ঠ ওভারে। বলের লেন্থ বুঝতে ভুল করেন লঙ্কান ব্যাটসম্যান। গুডলেন্থের বলে পুল করতে যেয়ে ধরা পড়েন রিয়াদের হাতে। এর আগে গুনাথিলাকাকে (৬) ফেরান মিরাজ।
মিরাজ ১০ ওভারে ৫৩ রান দিয়ে এই একটি উইকেট পান। এর মধ্যে এক ওভারে ১৪ রান খরচ করেন। গোটা সিরিজে একটি ম্যাচেও সুযোগ না দিয়ে ফাইনালের মতো আগুনে ম্যাচে তাকে নির্বাচকরা কী মনে করে ঠেলে দিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।
হঠাৎ মাঠে নামলেও মিরাজ শুরু থেকে ভালো বল করতে থাকনে। একাধিকবার উইকেট পাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি করেন।
অধিনায়ক মাশরাফী ৭ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে এক উইকেট নেন।