চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

রিয়ালের ‘বাতিলই’ বুন্দেসলিগার ‘রাজা’

রিয়াল মাদ্রিদ থেকে বাভারিয়ানদের সঙ্গে যোগ দেয়ার পরই নিজের পুরনো খোলস পাল্টে ফেলেন জেমস রদ্রিগেজ। শুরুটা ভাল করলেও বায়ার্ন মিউনিখ থেকে কার্লোস আনচেলোত্তির বিদায়ের আগ পর্যন্ত নিজের আত্মবিশ্বাসটা পুরোপুরি পাচ্ছিলেন না তিনি। কিন্তু ইয়ুপ হেইঙ্কস ডাগআউটে ফেরার পর বিস্ময়কর ফুটবল খেলছেন কলম্বিয়ান সুপারস্টার। আর রিয়ালের ‘ব্রাত্য’ থেকে হয়ে উঠেছেন বুন্দেসলিগার ‘রাজা’।

দুরন্ত গতি আর স্কিলে মুগ্ধ হয়েই তাকে দলে ভিড়িয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। রদ্রিগেজকে রিয়ালের ভবিষ্যৎ হিসেবেও দেখতে শুরু করেছিলেন অনেকে। কিন্তু এক-দেড় মৌসুম পরই হঠাৎ একাদশে অনিয়মিত হয়ে পড়েন কলম্বিয়ান তারকা। পরে তাকে ধারে বিক্রি করা হয় বায়ার্ন মিউনিখে।

তবে ক্লাব বদলালেও নিজের ফুটবল ধরনটা বদলাননি তিনি। গতি আর স্কিলেও ধার কমেনি রদ্রিগেজের। জিদানের দলে ব্রাত্য হয়ে এখন ‘জার্মান কাইজার’দের হয়ে রীতিমত ফুল ফোটাচ্ছেন।

সবশেষ ১২ ম্যাচে রিয়াল ও মোনাকোর সাবেক এই তারকা গোল করেছেন চারটি, আর সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ছয়টি। এমন ফুটবল খেলাই তাকে বায়ার্ন মিউনিখে অপরিহার্য করে তুলেছে।

সোমবার মেইনজের বিপক্ষেও দুরন্ত এক গোল করেছেন রদ্রিগেজ। এই গোলের পর মাদ্রিদভিত্তিক স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কা কারণ খুঁজছে, কী এমন ফ্যাক্টর যে কলম্বিয়ান তারকাকে এভাবে পাল্টে দিল।

মার্কার বিচারে যেসব ফ্যাক্টর কাজ করছে-
১. ইয়ুপ হেইঙ্কসের বায়ার্নে ফেরা
বর্ষীয়ান এই কোচ ডাগআউটে ফিরে ক্রান্তিকালে থাকা বায়ার্নের জাহাজটাকে ধীরে ধীরে টেনে তুলেছেন ইয়ুপ হেইস্কস। আর প্রথম দিন থেকেই উন্নতি করতে শুরু করেন রদ্রিগেজ। তিনি কোচের সবধরনের সাহায্যই পেয়েছেন, যেটা রিয়ালে থাকতে জিদানের দিক থেকে কখনোই পাননি।

২. খেলার স্বাধীনতা
বায়ার্নে নিজের জন্য এমন একটা জায়গা খুঁজে পেয়েছেন যেখানে তিনি পুরোপুরি স্বাধীনতা নিয়ে খেলতে পারছেন। উইং এবং ফরোয়ার্ডদের পেছনে থেকে বল সাপ্লাইয়ে তিনি যে পারদর্শী সেটাও ভালভাবে দেখাচ্ছেন তিনি। এছাড়া রদ্রিগেজ মাঝমাঠে খুব বিপজ্জনক এবং দ্রুতই গোলের কাছাকাছি হতে পারেন।

মূর্তিকারিগর

৩. সতীর্থরা তাকে মূল্যবান বলে মনে করে
রিয়ালে যেটা হয়নি বায়ার্নে সেটা হচ্ছে। অ্যালিঞ্জে অ্যারেনায় রদ্রিগেজকে সতীর্থরা তাকে মূল্যবান বলে মনে করেন। টমাস মুলার, আর্তুরো ভিদাল এবং জাভি মার্টিনেজ তো খোলাখুলিভাবেই রদ্রিগেজকে দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। আর এটাই জেমসে বেশি আত্মবিশ্বাস যোগাচ্ছে।

৪. এখানে প্রতিদিন নিজেকে প্রমাণের প্রয়োজন হয় না
হেইস্কসের দলে এখন প্রতিদিনই শুরু একাদশে মাঠে নামছে রদ্রিগেজ। এই ধারাবাহিকতাটা তার জন্য খুবই প্রয়োজনীয় ছিল। তবে একাদশে নিয়মিত হলেও প্রতিদিন নিজেকে প্রমাণ করার তাড়া থাকে না বায়ার্নে।

৫. বায়ার্নে তিনি সুখী
এটা কেউ বলতে পারবে না যে, মাদ্রিদে অসুখী ছিল রদ্রিগেজ। রিয়ালকে অনেক ভালবাসতেন, খুব সহজেই ক্লাবের পরিবেশ এবং সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছিলেন। ভাষাগত মিল থাকায় মাদ্রিদে তার জন্য কাজটা আরো সহজ ছিল।

রদ্রিগেজ যখন জার্মানিতে পা রাখেন তখন তার সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। স্পেনের চেয়ে অনেক বেশি ঠাণ্ডা আবহাওয়ার সঙ্গে জীবন-যাপন পদ্ধতিও কিছুটা ভিন্ন। তবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় ভাষা। তবুও এই সব তার উপর প্রভাব ফেলছে না। সবকিছু মানিয়ে নিয়ে এখন মিউনিখে অনেক সুখী রদ্রিগেজ। বায়ার্নের স্প্যানিশ ভাষী খেলোয়াড় গ্রুপের সঙ্গেও বোঝাপড়াটা ভালভাবে সেরে নিয়েছেন।