গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ব্লগার রাজীব হত্যা মামলায় দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে নিম্ন আদালত দেয়া রায় হাইকোর্ট বহাল রাখার পর সে রায় প্রত্যাখান করেছেন রাজীব হায়দারের বাবা ডাক্তার মো. নাজিম উদ্দিন।
রায় ঘোষণার পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি এই রায় প্রত্যাখান করলাম। যারা আমার সন্তানকে মেরেছে তারা প্রমাণিত সন্ত্রাসী, শিক্ষিত সন্ত্রাসী। কিন্তু তাদের সর্বোচ্চ সাজা হয়নি। জঙ্গিদের যদি সর্বোচ্চ সাজা দেয়া না হয়, তাহলে আপনি বুঝতে পারেন সমাজের কি অবস্থা।
এই মামলার অন্য আসামী মাকসুদুল হাসান অনিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ এবং অন্য আসামী এহসান রেজা, নাঈম শিকদার ও নাফিজ ইজতিয়াজ, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসীমুদ্দিন রাহমানী, সাদমান ইয়াছিরকে বিচারিক আদালতের দেওয়া বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ডাদেশ রোববার বহাল রাখেন হাইকোর্ট। আসামিদের শাস্তি বৃদ্ধির জন্য রাজীবের বাবা ডা. নাজিম যে ক্রিমিনাল রিভিশন (শাস্তি পুনর্বিবেচনা) আবেদন করেছিলেন তা খারিজ করে দেন আদালত।
রায়ে ক্ষুদ্ধ ডা. নাজিম বলেন, “সরকার বলে, তারা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। আমরা ওদেরকে ছাড় দেব না। এদেশের সরকার জঙ্গি দমনে বদ্ধপরিকর। কিন্তু আদালতে এসে তার প্রমাণ আমি পাইনি।”
রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন কিনা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার যতটুকু সুযোগ আছে সেটুকু করবো।
গত ৯ জানুয়ারি এই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের বেঞ্চ রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন।
এই মামলায় নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া দুজনের মধ্যে পলাতক রানা আপিল করেনি। অন্যদের মধ্যে ফয়সালসহ সাত জন আপিল করে।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ে দুজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের প্রধান মুফতি জসীমউদ্দীন রাহমানীসহ অন্য ছয় আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয় ঢাকার ৩ নং দ্রুত বিচার আদালত।
২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পল্লবী থানার পলাশনগরে নিজ বাড়ির সামনে ব্লগার রাজীব হায়দারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় রাজীবের বাবা পল্লবী থানায় মামলা করেন। এই মামলায় গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ রায় দেন।