চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

রায়ের অপেক্ষায় ‘প্রায়’ স্বাভাবিক ঢাকা

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণার অপেক্ষায় রাজধানীর রাস্তায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দেখা গেছে ঢিলেঢালা অবস্থায়।

ব্যক্তিগত যানবাহন রাস্তায় যথেষ্ট থাকলেও স্বাভাবিকের তুলনায় ছিল অনেক কম। এছাড়া গণপরিবহন ব্যবস্থা প্রায় স্বাভাবিক ছিল। তবে সাধারণ মানুষের চোখে-মুখে ছিল অজানা আতঙ্কের ছাপ।

সকালের মৃদু শীত ও হালকা কুয়াশার মধ্যেও রাজধানীবাসীকে নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রাস্তায় চলাচল করতে দেখা গেছে। বিভিন্ন অফিস-আদালত ও স্কুল কলেজ খোলা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের দেখা গেছে নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে।

তবে জনজীবন স্বাভাবিক থাকলেও অন্যান্য দিনের তুলনায় রাজপথে লোকজনের উপস্থিতি অনেক কম। তারপরও অন্যদিনের চেয়ে গণপরিবহন কিছু কম থাকায় গন্তব্যস্থলে যেতে সময়মতো গাড়ি পেতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অনেকেই।

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সারাদেশে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। পুলিশ-র‌্যাবের পাশাপাশি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মোতায়েন করা হয়েছে ৭৬ প্লাটুন বিজিবি।বিএনপি-রায়-খালেদা জিয়া-রাজধানী

বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সকাল ১০টায় আদালতের উদ্দেশে রওনা হবেন চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজার সামনের গলিতে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত আর্মড পুলিশ। গত রাত থেকে দলের পল্টন অফিসের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। রয়েছে পুলিশের সাঁজোয়া যানও।

শাহবাগ ও হাইকোর্ট এলাকায় পুলিশের বিশেষ প্রহরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকতে দেখা গেছে। পুলিশের টহল গাড়ি ঘুরে বেড়াচ্ছে রাজপথ জুড়ে।বিএনপি-রায়-খালেদা জিয়া-রাজধানী

রায় নিয়ে আগের দিন বুধবার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন খালেদা জিয়া। সেখানে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন: আমি যেমন থাকি, যেখানে থাকি, যেভাবেই থাকি – দেশবাসীকে কখনো ছেড়ে যাবো না। আপনাদের খালেদা জিয়া কোন অন্যায় করেনি।

‘আমি যে কোন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত। জেলের ভয় আমাকে দেখিয়ে লাভ হবে না। আমি মাথা নত করবো না। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন, জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলন থেকে আমি সরবো না।’বিএনপি-রায়-খালেদা জিয়া-রাজধানী

নানা বিচারিক ধাপ পার করে এই মামলার কার্যক্রম শেষ হয় গত ২৫ জানুয়ারি। মামলাটি দায়ের হয় ২০০৮ সালের ৩ জুলাই।

বিদেশ থেকে এতিমদের নামে আসা ২ কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন।

মামলাটি তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয় ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট। তদন্তে প্রমাণ না পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সৈয়দ আহমেদ ও গিয়াসউদ্দিন আহমেদের নাম বাদ দেয়া হয়। আর নতুন করে অভিযুক্ত হন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ডক্টর কামাল সিদ্দিকী। ওই মামলায় ৬ আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জগঠন করা হয় ২০১৪ সালের ১৯শে মার্চ।বিএনপি-রায়-খালেদা জিয়া-রাজধানী

আসামীরা হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ডক্টর কামাল সিদ্দিকী, সাবেক এমপি সলিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

প্রতিবেদনটি তৈরিতে তথ্য ও ছবি দিয়ে সহযোগিতা করেছেন; তানজীমা এলহাম বৃষ্টি, আরেফিন তানজীব, ওবায়দুল হক তুহিন, জাকির সবুজ ও তামান্না তামিম।