চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

রাষ্ট্রদূতের ব্যাগ চুরির লজ্জায় প্রশ্নবিদ্ধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আর দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে গতকাল থেকে আলোচনার অন্যতম বিষয় হয়ে উঠেছে নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত লিওনি মার্গারেথা’র ব্যাগ চুরির ঘটনাটি। সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের একটি অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এসে চুরি যায় রাষ্ট্রদূতের ব্যাগটি। ব্যাগে থাকা বেশ জরুরি জিনিস খোয়া গেছে তাঁর। আমন্ত্রিত অতিথিদের বক্তব্য শেষে রাষ্ট্রদূত মঙ্গলবাতি জ্বালানোর সময় ঘটনাটি ঘটে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আলো জ্বলে ওঠার পর নিজ আসনে ফিরে গিয়ে রাষ্ট্রদূত তার ব্যাগটি আর খুঁজে পান নি। এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনায় মর্মাহত হয়ে বিষয়টি নিয়ে কোন কথাই বলেন নি তিনি। এরই মধ্যে ভিডিও ফুটেজ দেখে চুরির সঙ্গে জড়িত বলে একজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। যাকে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার ‘কুলাঙ্গার ও বাংলাদেশের লজ্জা’ বলে আখ্যায়িত করে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিতে অনুরোধ করেছেন তার ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্টে। তিনি তার ফেসবুক অনুসারীদেরকে চোরের ছবিটি দ্রুত ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধও করেছেন। নিশ্চিতভাবেই এই চোরের কারণে সমগ্র দেশ বড় রকমের এক লজ্জায় পতিত হয়েছে। তবে দেশের ভেতরে শুধু ছিঁচকে নয়, বরং বড় চোর বা রাঘব-বোয়ালরাও যে আছে, তাদেরও চেনে রাষ্ট্র। এদের সবার বিরুদ্ধেই আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। কথা হলো, রাষ্ট্রদূতের জন্য আলাদা বা বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে। সেই নিরাপত্তার গন্ডি পেরিয়ে একজন ছিঁচকে চোর কীভাবে পৌঁছে গেলো রাষ্ট্রদূতের আসনে? কী উপায়ে এটা সম্ভব হলো তা আমাদের মনে অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এই বিষয়টি আমাদের বেশ আতংকিত করেছে। গুলশানের হলি আর্টিজানের ঘটনা বেশিদিনের পুরোনো নয়। ১৭ জন বিদেশীসহ সেদিন নিহত হন মোট ২২ জন। শ্বাসরুদ্ধকর জিম্মি দশা শেষ হয় কমান্ডো অভিযানের মধ্য দিয়ে ২ জুলাই সকালে। বাংলাদেশ কখনোই ভুলবে না ১ জুলাই দিবাগত রাতের কথা। কাউন্টার টেররিজম ইউনিট, র‌্যাব, পুলিশ- তাদের যেমন সাফল্যগাথা আছে তেমনি ভেবে অবাক হতে হয়, তাবেলা সিজার, কুনিও হোশি আর হলি আর্টিজানের মতো ঘটনার পরও একজন রাষ্ট্রদূতের জন্য বা একজন বিদেশীর জন্য কী মানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেওয়া হচ্ছে এ দেশে। আমরা বলতে চাই, ছিঁচকে চোর দেশের জন্য নিশ্চিত লজ্জা বয়ে নিয়ে এলেও, চোখে আঙুল দিয়ে ঠিকই নিরাপত্তার ফাঁক-ফোকর দেখিয়ে গেলো। লজ্জার চেয়েও দুর্বল নিরাপত্তার বিষয়টি আরো বেশি ভয়ংকর। আমাদের প্রত্যাশা এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে সব ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হোক।