চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

রাশেদ চৌধুরীকে ফেরাতে উদ্যোগী যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ

যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়া বঙ্গবন্ধুর খুনী রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফেরত আনতে সেখানে জনমত গঠনের পাশাপাশি আইনি উদ্যোগও নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ। যুক্তরাষ্ট্র শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান জানিয়েছেন, খুব শিগগিরই তারা বিষয়টি নিয়ে শীর্ষ মার্কিন আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করবেন।

বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনী রাশেদ চৌধুরীর যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার খবর পেয়েই তারা জনমত গঠন ও আইনি উদ্যোগের  পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছেন ড. সিদ্দিক।

‘বার বার বাসস্থান পরিবর্তনের কারণে রাশেদ চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্যদের অবস্থান সম্পর্কে বিস্তারিত জানা সম্ভব না হলেও সেখানে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা আইনের ভেতরে থেকে সবকিছুই করবেন,’ বলে তিনি চ্যানেল আই অনলাইনকে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন: মার্কিন আইনে সেখানে অবস্থানরত কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে সামাজিক ও আইনগতভাবে কোনো পদক্ষেপ নেয়া কঠিন। ইচ্ছা করলেই কারো উপর চড়াও হওয়া সম্ভব হয় না। তাছাড়া অভিবাসন আইন অনুযায়ী প্রবাসীরা অনেক নিয়ম কানুনে বাঁধা।

‘সে কারণে রাশেদ চৌধুরীর মতো চিহ্নিত খুনীরা সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিলেও তাদের বিরত রাখতে বাধ্য করা সম্ভব হয় না,’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারপরও আইনের ভেতরে থেকে জনমত গঠনে যা যা করা যায় তা তারা করবেন।

তিনি বলেন: যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অঙ্গরাজ্যে মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ। এরকম কোনো অঙ্গরাজ্য থেকে অন্য দেশে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিকে দেশে ফেরত পাঠানো দু’দেশের সরকারের সিদ্ধান্ত ছাড়া অসম্ভব।

প্রবাসীরা জানিয়েছেন, এ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের সেক্রামেন্টো থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরে কন্ট্রা কস্তা কাউন্টির কনকর্ড শহরে বসবাস রাশেদ চৌধুরী এবং তার পরিবারের।

১৯৭৫ সালের নভেম্বরে দেশ ত্যাগ করলেও রাশেদ চৌধুরী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকুরি পায়। পরের সরকারগুলোর আমলে চাকুরি করতে থাকলেও ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে পর্যটক ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমায় রাশেদ চৌধুরী। তখন থেকে মিসৌরি, ক্যালিফোর্নিয়া, ইলিনয়, মিশিগানসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে তার অবস্থান ছিলো।

গত বৃহস্পতিবার মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমকে জানান যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া রাশেদ চৌধুরী।

‌ঊনিশ বছর আগে রাশেদ চৌধুরী রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করলে চৌধুরী ও তার পরিবারের অতীত কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত যাচাই-বাছাইয়ের জন্য রেখে ওই আশ্রয়ের আবেদন যুক্তরাষ্ট্র প্রাথমিকভাবে অনুমোদন করে। সবকিছু জেনেও সম্প্রতি তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অবশ্য তারপরও রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আশাবাদী।

‘উচ্চ আদালতে মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় পেলেও তা প্রত্যাহারের আবেদনের সুযোগ আছে। সেটাও আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে করতে হবে,’ বলে জানিয়েছেন তিনি।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ছয় বছর বয়সী সুকান্ত বাবুসহ ছয়জনকে সরাসরি ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে রাশেদ চৌধুরী।