রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি আজ। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভারতের কোম্পানি ভেল এর সাথে এই চুক্তি হবে। বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ চ্যানেল আইকে চুক্তি হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ভারতের প্রতিনিধি দল আজ সন্ধ্যায় বাংলাদেশ এসে পৌঁছবেন। তারপরই চুক্তিটি সম্পন্ন হবে। আগামীকাল তারা রামপাল এলাকা পরিদর্শন করবেন।
বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফপিলি) ১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক মৈত্রী সুপার থারমাল পাওয়ার নামের এই কেন্দ্র স্থাপন করবে। ফেব্রুয়ারি মাসে এই চুক্তি হওয়ার কথা ছিল।
দরপত্র মূল্যায়ন শেষে জানুয়ারি মাসে ভারতের কোম্পানি ভেলকে অনুমোদন দিয়ে ছিল বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (বিআইএফপিসিএল), বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি), ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার করপোরেশন (এনটিপিসি) এর স্ব স্ব বোর্ড।
তিন বোর্ডের অনুমোদন পাওয়ার পর গত ৩০ জানুয়ারি ভেলকে চিঠি দিয়ে চুক্তি করতে বলা হয়ে ছিল। শর্ত অনুযায়ী, চিঠি পাওয়ার ২৮ দিনের মধ্যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ভেলকে বিআইএফপিসিএল এর সঙ্গে চুক্তি করার কথা। কিন্তু পরে এই সময় বাড়ানো হয়।
গতবছরের ২২ সেপ্টেম্বর রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে তিনটি কোম্পানি দরপ্রস্তাব জমা দেয়। এরমধ্যে যৌথভাবে জাপানের মারুবিনি করপোরেশন ও ভারতের লারসেন অ্যান্ড টুব্রো লিমিটেড এবং চিনের হারবিন ইলেকট্রিক ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি লি, ফ্রান্সের এএলএসটিওএম ও চীনের ইটিইআরএন। এছাড়া ভারতীয় কোম্পানি ভারত হেভি ইলেক্ট্রিক্যালস লিমিটেড (ভেল) এককভাবে দরপ্রস্তাব জমা দেয়। দরপ্রস্তাবের সাথেই কোম্পানিগুলো কেন্দ্র স্থাপনের বিনিয়োগ কারা করবে তার নিশ্চয়তা নিয়ে এসেছিল।
চূড়ান্ত চুক্তি করার তিনমাসের মধ্যে অর্থনৈতিক চুক্তি করতে হবে। অথনৈতিক চুক্তির ৪১ মাসের মধ্যে প্রথম ইউনিট এবং ৪৬ মাসের মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে আনতে হবে। এই হিসেবে কেন্দ্র স্থাপন শেষ হবে ২০১৯ সালের শেষে। রামপাল কেন্দ্রের ৭০ শতাংশ অর্থ ঋণ নেয়া হবে। এই ঋণ দেবে ভারতের এক্সিম ব্যাংক। বাকি ৩০ শতাংশ পিডিবি ও এনটিপিসি যৌথভাবে বিনিয়োগ করবে।
সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই কেন্দ্র স্থাপনে আনুমানিক খরচ ধরা হয়েছে ২০১ কোটি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এর ১৫ শতাংশ হিসাবে ৩০ কোটি ২১ লাখ ৮৪ হাজার ডলার দিতে হবে পিডিবিকে।
রামপালে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা পরিবেশবান্ধব হবে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করতে ইউনেস্কো ইতিমধ্যে রামপাল এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
বাংলাদেশের একাধিক পরিবেশবিদ এই কেন্দ্র স্থাপনের বিরোধিতা করে আসছে। তারা মনে করছেন, রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে সুন্দরবনের ক্ষতি হবে।