চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

রাজ্যপালের কার্যক্রম সুপ্রিম কোর্টের পরিধির বিষয় নয়: কেন্দ্রীয় সরকার

রাজ্যপালের কার্যক্রম শীর্ষ আদালত সুপ্রিম কোর্টের পরিধির মধ্যে নয় বলে জানিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। দেশটির মহারাষ্ট্র প্রদেশে রাজ্যপাল বিজেপিকে সরকার গঠনের আহ্বানের পর শনিবার সকালেই হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন দেবেন্দ্র ফডনবীস। এরপরেই রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে দেশটির শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট।

রোববার ওই মামলারই শুনানিতে ওই যুক্তি দেয় কেন্দ্রীয় সরকার।

দেশটির মহারাষ্ট্র প্রদেশে শুক্রবার রাত পর্যন্তও শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট সরকার গঠনের ব্যাপারে তৎপর ছিল। কিন্তু রাত পেরিয়ে শনিবার সকালে ওই রাজ্য থেকে রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহার করা হয় এবং সকাল ৮ টা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন দেবেন্দ্র ফডনবীস। পাশাপাশি উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের ভাইয়ের ছেলে অজিত পাওয়ার।

এই ঘটনায় মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আনে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট। তারা অভিযোগ করে বলেন ‘রাজ্যপাল তার উচ্চপদকে উপহাস করেছেন।’

এদিকে বিজেপির হয়ে সুপ্রিম কোর্টে লড়াই করা অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহাতগি দাবি করেন, রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত কখনোই বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার বিষয় হতে পারে না। রাজ্যপাল নিজের কাজের জন্য জবাবদিহি করতে পারেন না। ৩৬১ নম্বর অনুচ্ছেদে রাজ্যপাল এ ব্যাপারে দায়মুক্ত। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে যে কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

জোটের আবেদনের প্রতি ইঙ্গিত করে রোহাতগি বলেন, প্রত্যেকেই জানেন যে সুপ্রিম কোর্ট কোনও রাজ্যপালকে তাদের সরকার গঠনে আমন্ত্রণ জানাতে নির্দেশ দিতে পারে না। কেননা আইনসভা আদালতকে সম্মান করে এবং আদালত আইনসভাকে সম্মান করে।

রোববার প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নির্দেশের শুনানিতে রাজি হওয়া তিন বিচারপতির বেঞ্চের অন্যতম বিচারপতি রমনা জবাবে বলেন, “আমরা আইনসভাকে সম্মান করি। রাজ্যপাল কী চেয়েছিলেন তা আমরা জানি না। দেবেন্দ্র ফডনবীসের সমর্থন পত্র জমা দেওয়ার বিষয়ে আরেক বিচারপতি ভূষণের প্রশ্নের জবাবে জোটের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান যে এটি “রেকর্ডে নেই”।

এরপরেই উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সলিসিটার জেনারেলকে সোমবার সকালের মধ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহার এবং দেবেন্দ্র ফডনবীসকে মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়ে দেওয়া চিঠিটি আদালতের কাছে পেশ করার নির্দেশ দেয়। এই বেঞ্চ ফড়নবীস, তার উপ মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার, মহারাষ্ট্র সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারকেও নোটিশ পাঠিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিশেষ ছাড়পত্র নিয়ে শনিবার সকাল ৬ টার আগেই রাষ্ট্রপতি শাসন বাতিল হওয়ার পরে, রাজ্যপাল দেবেন্দ্র ফড়নবীসকে সরকার গঠনের জন্য আমন্ত্রণ জানান রাজ্যপাল। যেখানে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন দেবেন্দ্র ফডনবীস এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন শরদ পাওয়ার ভাইপো অজিত পাওয়ার।অন্যদিকে কংগ্রেস জোট দাবি করে রাজ্যপাল দেবেন্দ্র ফডনবীসকে সরকার গঠনের জন্য আমন্ত্রণ জানানোর আগে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পরীক্ষা করে দেখার জন্য রাজ্যপাল দায়বদ্ধ।

শিবসেনা, এনসিপি এবং কংগ্রেস দাবি তাদের সঙ্গে ১৫৪ জন বিধায়ক রয়েছেন। তারা সরকার গঠন করার জন্যে অন্যতম প্রধান দাবিদার।

অক্টোবরের নির্বাচনে ২শ’ ৮৮টি আসনের ১শ’ ৫টিতে জিতে বিজেপি ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় এ রাজ্যটিতে একক বৃহত্তম দল হয়। কিন্তু জোটসঙ্গী ৫৬টি আসন জেতা শিব সেনার সাথে নতুন সরকার নিয়ে মতের মিল না হওয়ায় প্রথম দফায় তারা সরকার গঠনে ব্যর্থ হয়। বিরোধী জোটের এনসিপি ৫৪ ও কংগ্রেস ৪৪টি আসন জিতে।