আবারও নির্যাতনের শিকার শিশু। মোবাইল চুরির অভিযোগে দড়ি দিয়ে বেঁধে পেটানোর পর তা ভিডিও করে রাখার ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীর পবা উপজেলায়।
জাহিদ হাসান (১৫) ও ইমন আলী (১৩) নামে দুই শিশুকে গত শুক্রবার বিকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত একটি ঘরে তাদেরকে আটকে রাখার পর দড়ি বেঁধে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। পরে গুরুতর আহত জাহিদকে পবা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।
জাহিদ পবার চৌবাড়িয়া এলাকার মো: ইমরানের ছেলে ও বাগসারা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। আর ইমনের বাবার নাম মাসুদ রানা।
নির্যাতনের বিষয়ে জাহিদ বলেন, ‘আমাকে মেরেছে পলাশ, অমল, নাসির, তুহিন, অনিক, রেজাউল, রেজাউলের ভাই আজিজুল।’
জাহিদের বাবা বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা যখন যাই ওই বাড়িতে তখন দেখি আমাদের বাড়ির ভেতর ঢুকতে দেয় না। ঢুকতে গেলে পড়ে ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে।’
এই ঘটনায় জাহিদের বাবা বাদী হয়ে পবা থানায় একটি মামলা করার পর শনিবার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে আজিজুল ইসলাম নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পবা থানার ওসি শরিফুল ইসলাম জানান, থানায় আটককৃতের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। মামলা হয়েছে ১৩ জনের বিরুদ্ধে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রিয়াজুল হক বলেন, ‘যেসময় তাকে (জাহিদ) পেলাম সেসময় অবস্থা কিছুটা খারাপ ছিলো। তারপর যতটুকু সম্ভব তাকে চিকিৎসা দেই। এখন সে আশঙ্কামুক্ত।’
স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার সকালে পবার চৌবাড়িয়া এলাকার ফজলুর রহমানের ছেলে রাকিবের একটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। ওই ফোন চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে প্রথমে ইমনকে ধরে নিয়ে যায় ফজলুর বাড়ির লোকজন। এরপর দুপুর তিনটার দিকে নানার বাড়ি বিরসইল গ্রামে বেড়াতে যাওয়ার সময় ধরে নিয়ে যাওয়া হয় জাহিদ হাসানকে।
পরে ফজলুর বাড়ির একটি কক্ষে আটকে রেখে দুই শিশুকে বেঁধে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। এসময় নির্যাতনকারীদের একজন মোবাইল ফোনে ওই দৃশ্য ধারণ করে রাখে।
কোনো প্রমাণ না পেয়ে শেষ পর্যন্ত অভিযুক্ত দুই শিশুকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ভয়ে ইমন বাড়ি ছেড়ে রাতেই পালিয়ে যায়। আর জাহিদকে তার বাড়ির লোকজন পবা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করেন।