দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত সিলেটে শিশু রাজন হত্যা মামলায় রোববার তার চাচা আল-আমিনকে জেরা করতে গিয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী ডিজিটাল বাংলাদেশে এ ধরনের ভুয়া ভিডিও তৈরি করা সম্ভব বলে দাবি করেন।
এক পর্যায়ে ওই ‘ভিডিওচিত্রটি ভুয়া’ এবং ‘চুরির দায়ে গণপিটুনি’তেই রাজনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রমাণের চেষ্টা করেন।
তবে আসামিপক্ষের আইনজীবীর এমন জেরার মুখে আল-আমিন বলেন, ‘আমরা না হয় অতসব বুঝি না, কিন্তু সারাদেশের মানুষ এই ভিডিও দেখেছে। কেউ তো ভুয়া বলেনি।’
আদালত থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের সাক্ষ্য শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুল খালিকের জেরার বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হয় বলে জানান আল-আমিন।
সিলেটটুডে২৪.কম-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে আল-আমিনের বক্তব্য তুলে ধরা হয়।
আল আমিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন, চুরির দায়ে গণপিটুনিতে মারা গেছে রাজন। আর তাকে নির্যাতনের যে ভিডিওটি বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তুলেছে তা ভুয়া।’
রোববার সিলেট মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধার আদালতে ২য় দিনের মতো চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার সাক্ষ্য নেওয়া হয়।
এ দিন সাক্ষ্য দেন নিহত রাজনের মা লুবনা বেগম, চাচা আল আমিন, প্রতিবেশী মাসুক আহমদ ও জিয়াউল হক।
রাজন হত্যার পর এক বিক্ষোভ সমাবেশে ‘সিলেটের কোনো আইনজীবী রাজনের ‘খুনি’দের পক্ষে লড়বেন না’ সিলেট জেলা জজ আদালতের পিপি এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের এমন ঘোষণা দিয়েছিলেন।
সাক্ষ্য নেওয়ার সময় আদালত চত্বরে উপস্থিত ছিলেন রাজনের বাবা শেখ আজিজুর রহমান।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কামরুল ইসলামে ফিরিয়ে না আনায় আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি। তাকে ফিরিয়ে আনা না গেলে ন্যায় বিচার সম্ভব হবে না।
সাক্ষ্য শেষে পিপি এডভোকেট মফুর আলী জানান, আগামী ৭ অক্টোবর সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত।
এর আগে গত ১ অক্টোবর মামলার বাদী বরখাস্তকৃত পুলিশ উপ-পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম ও রাজনের পিতা আজিজুর রহমান সাক্ষ্য দেন।
সৌদি পলাতক কামরুল ইসলামসহ ১৩ জনকে আসামি করে গত ১৩ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠন করা হয়। এদের মধ্যে ১০ জন আটক রয়েছেন।
গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমরগাঁও বাসস্ট্যান্ডের পাশে চুরির অভিযোগে শিশু সামিউল আলম রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
ওই ঘটনার ভিডিওচিত্র ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয় ঘাতকরা। যে ভিডিও দেখে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।