পরীক্ষার সময় হরতাল-অবরোধের সঙ্গে গণিতে প্রথমবারের মতো সৃজনশীল প্রশ্নপত্র চালু করার কারণে এসএসসির ফলে কিছুটা ধাক্কা লেগেছে। ফল বিশ্লেষণ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, প্রথমবার বলে গণিতে সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বুঝতে শিক্ষার্থীদের কিছুটা সমস্যা হয়েছে।
এর সঙ্গে যোগ করে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, মানসিক চাপেও ছিলো তারা।
এরকম একজন শিক্ষার্থী ভিকারুন নিসা নূন স্কুলের নিশাত তামান্নুম। সে বললো, আমরা যেভাবে রুটিন পাই সেভাবেই প্রস্তুতি নেই। বার বার রুটিন পরিবর্তন হওয়ায় আমাদের প্রস্তুতি নষ্ট হয়ে গেছে।
নিশাত তামান্নুমের অভিভাবক রেহেনা হক বলেন, ছেলে মেয়েরা এমনও অনেক পরীক্ষা দিয়েছে যখন তারা আগেরদিন পর্যন্ত জানতো না যে পরদিন কী পরীক্ষা হবে।
পরীক্ষার সময় হরতাল-অবরোধের কারণে শিক্ষার্থীদের এরকম উদ্বেগের কথা স্বীকার করে শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচিতে পরীক্ষা পেছানোর বিকল্প থাকে না। তবে এর সঙ্গে গণিতে সৃজনশীল প্রশ্নপত্র চালুও পাসের হার কম হওয়ার একটি কারণ।
শিক্ষা সচিব বলেন, পরীক্ষার সময় সব জায়গায় হরতাল-অবরোধ সমানভাবে প্রভাব ফেলেনি। কোথাও বেশি আতঙ্ক ছিল, কোথাও আবার গোলযোগ বেশি হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা এবার গণিত ও উচ্চতর গণিতে সৃজনশীল পদ্ধতি চালু করেছি। যখন নতুন কোনো কিছু শুরু করা হয় তখন তার পেছনে অনেক শ্রম দিতে হয় যা আমরা হরতাল-অবরোধের কারণে পারিনি। মূলতঃ গণিতে সৃজনশীল পদ্ধতি পরীক্ষার ফলাফলের সব সূচকে ধাক্কা লাগার অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি অন্যতম কারণ।
কথিত সেরা তালিকা
শিক্ষা সচিব বলেন, শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকতে অনেক স্কুল পরীক্ষায় নানা অনিয়ম করে বলে আগামীবার থেকে এরকম তালিকা করা হবে না।
আর নৈর্ব্যক্তিক পদ্ধতি থাকবে কি না, সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নিয়ে সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১০ বোর্ডের গড় পাসের হার ৮৭.০৪। জিপিএ ফাইভ পেয়েছে এক লাখ ১১ হাজার ৯’শ ১ জন। গত বছর ১০ বোর্ডে গড় পাসের হার ছিলো ৯১.৩৪। এক লাখ ৪২ হাজার ২’শ ৭৬ জন পরীক্ষার্থী পেয়েছিলো জিপিএ-ফাইভ। আট সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে গতবারের চেয়ে গড় পাসের হার কমেছে ৫.৯৫ শতাংশ। আর গণিতে পাসের হার কমেছে ৭.৭৩ শতাংশ।