রাজধানীর পাশেই নারায়ণগঞ্জের হরিপুরে ইয়াবা তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে বন্দর থানার হরিপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে ইয়ার তৈরির উপকরণ ও কারখানার সরঞ্জামসহ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে মাদক দ্রব্য অধিদপ্তর।
শুক্রবার দুপুরে তেজগাঁওস্থ মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জের জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়, ঢাকা, ঢাকা মেট্রো উপ অঞ্চলের স্টাফ এবং বন্দর থানা ধামগড় পুলিশ ফাঁড়ির দুইজন পুলিশসহ ১২ জনের একটি রেইডিং দল হরিপুরের হাবিবুর রহমানের বাড়িতে তল্লাশি চালায়।
বাড়ীর কর্তা হাবিবুর রহমান পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থল থেকে হাবিবুরের স্ত্রী লাকি আক্তারকে (৩২) গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি বলেন, হরিপুরের ওই বাড়ি থেকে আমরা ছোটখাটো ইয়াবা তৈরির কারখানার সন্ধান পাই। সেখান থেকে একটি পলিথিনের জিপারে এ্যামফিটামিনযুক্ত ইয়াবা ট্যাবলেট ২০০ পিস, ইয়াবা তৈরির উপকরণ পাউডার দুই কেজি, ক্যামিক্যাল ৩০০ গ্রাম, তরল পদার্থ ২০০ গ্রাম, ডাইস মেশিন তিনটি, সিসি ক্যামেরা দুটি, ডিভাইস , মনিটর ও মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ইয়াবার উপাদান সিডিওফেড্রিন গেল বছরের এপ্রিলে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেউ হয়তো সেটা সংরক্ষণ করে রেখে উৎপাদন কাজ পরিচালনা করছিল। আমরা এসব আমাদের নিজস্ব ল্যাবে পাঠাবো, আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে এগুলো নকল ইয়াবা তৈরির উপাদান, যা কিনা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর অনেক সময় প্রাণহানিও ঘটাতে পারে।
ইয়াবা আমদানি পাশের দেশ থেকে হয় এখন নিজেদের দেশেই উৎপাদন হচ্ছে এ ব্যাপারটাকে মাদকদ্রব্য অধিদপ্তর কিভাবে মূল্যায়ন করছে জানতে চাইলে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন: আমরা মাদকের মূলোৎপাটন করতে চাই, তবে এর জন্য আমাদের যে লোকবল রয়েছে তা নিয়ে একা মাদকের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালানো কষ্টসাধ্য, তবে যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করা হলে তা সম্ভব। এমন আরো কারখানা আছে কিনা সেই ব্যাপারে গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বিপ্লব কুমার মণ্ডল চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, হরিপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের বাড়িটি ছিল সিসি ক্যামেরা দিয়ে ঘেরা টিনশেড বাড়ি। ভেতরে তিনটি কক্ষের মধ্যে একটি কারখানার সব কিছু পরিচালিত হতো।
তিনি বলেন, হাবিবুর ও তার স্ত্রী লাকি ইয়াবা ব্যবসা ও উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে হাবিবুর পালিয়ে যায়। তাকে গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তার হওয়া লাকী আক্তারকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর আরও তথ্য জানা যাবে।