রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস আরো তিনমাস চলবে বলে জানিয়েছে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে বিআরটিএ’র পরিচালক শেখ মাহবুব-ই-রব্বানীর নেতৃত্বে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি তিন মাসের মধ্যে জানাবে রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস দরকার আছে নাকি নেই?
কমিটিতে রয়েছেন, বিআরটিএর দু’জন, পুলিশের একজন, একজন করে মালিক ও শ্রমিক নেতা এবং তিনজন সাংবাদিক। তবে যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বা ব্যক্তিদের এই কমিটিতে রাখা হয়নি।
সিটিং সার্ভিস থাকবে কি থাকবে না এ প্রসঙ্গে শেখ মাহবুব-ই-রব্বানী চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, তিনমাসের মধ্যে আমরা একটি সিধান্তে আসবো রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস প্রয়োজন রয়েছে কি না। এই কমিটিতে সাংবাদিক রাখা হয়েছে কারণ তারা জনগণের চাহিদাটি খুব সহজে বুঝতে পারেন।
শুধু সিটিং সার্ভিস নয়, গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য এই কমিটি কাজ করবেন বলে জানান তিনি।
সিটিং সার্ভিসে ভাড়া নৈরাজ্যের বিষয় নিয়ে কোনো পদক্ষেপ রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য কমাতে মাঠে মোবাইল কোর্ট রয়েছে। যেখানে অনিয়ম চলছে সেখানেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবে ভাড়া নৈরাজ্য ঠেকাতে শুধু মোবাইল কোর্ট নয় যাত্রীদের আরও বেশি সচেতন হতে হবে। তারা যদি প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তাহলে ভাড়া নৈরাজ্য অনেকটা কমেবে।
তবে এই কমিটি নিয়ে দ্বিমত পোষণ করেছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী। চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন, এই কমিটি সাজানো হয়েছে শ্রমিক-মালিক নিয়ে। যেখানে জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে কাউকে রাখা হয়নি। এই কমিটি ভাড়া নৈরাজ্যে জনস্বার্থের জন্য কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, সরকার যখনই জনস্বার্থের জন্য কাজ করতে যায় তখনই মালিকপক্ষদের চাপে তা বন্ধ হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে সিটিং বন্ধ করা সরকারের একটি কঠিন চ্যালেঞ্জে।
সিটিং সার্ভিস বন্ধের জন্য অামরা অনেক আগ থেকেই বিআরটিএকে বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ দিয়েছে এরপরও তারা আমাদের এ কমিটিতে রাখেননি। যাত্রীদের কথা চিন্তা করে আমরা খুব শিগগিরই একটি নাগরিক সমাজ কমিটি গড়ে তুলব। সেই কমিটি যাত্রী দুর্ভোগ নিয়ে গণশুনানি করবে এবং সরকারের কাছে তুলে ধরবে।
অন্যদিকে সিটিং সার্ভিসের নামে প্রেসক্লাব থেকে শাহবাগ পর্যন্ত হিমাচল পরিবহন, স্বাধীন এক্সপ্রেস, দিশারী পরিবহন, সময় নিয়ন্ত্রণ, শিকড় পরিবহনের বাস-মিনিবাসে ২৫ টাকা ভাড়া আদায় করছে।
শতাব্দী, আল মক্কা, মালঞ্চ, বসুমতি ও রাইদা পরিবহনের বাস-মিনিবাসে এই পথে ভাড়া নেয়া হচ্ছে ২০ টাকা।
শুভেচ্ছা, ওয়েলকাম, তানজিল, গুলিস্তান-গাজীপুর পরিবহন ও মেশকাত পরিবহনে ১০ টাকা। লোকাল নামে চলা মিনিবাসে ৫ টাকা নেয়া হচ্ছে।
অথচ বিআরটিএর হিসাবে, এই পথের দূরত্ব ১ দশমিক ৯ কিলোমিটার। মিনিবাসে ভাড়া হওয়ার কথা সর্বনিম্ন ৫ টাকা এবং বড় বাসের ৭ টাকা।
গত ১৫ এপ্রিল ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ঘোষণায় রাজধানীর গণপরিবহনে সিটিং সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়। সার্ভিস বন্ধের পরও ভাড়া নৈরাজ্য না কমায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সিদ্ধান্ত নেন আরও ১৫দিন চলবে সিটিং সার্ভিস।
১৫ দিন শেষ হওয়ার পর আবারও তিনমাসের জন্য সিটিং সার্ভিস চালু রাখার ঘোষণা দেয়া হয়।