রাজধানীতে যানবাহন সংকট আর যানজটের কারণে ক্ষুব্ধ আর বিরক্ত কর্মজীবী মানুষেরা। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা অসহ্য এ যন্ত্রণা থেকে আদৌ কোনোদিন মুক্ত হওয়া যাবে কি না সেই সংশয়ে আছেন তারা। শুক্র আর শনিবার ছাড়া বাকি ৫ দিনই একই চিত্র। নগরের যানজট দূর করতে অনেক উড়াল সড়ক তৈরি হলেও সেইসব উড়াল সড়কেও দেখা দিচ্ছে যানজট।
কর্মস্থলে যেতে হলে অফিসগামী কর্মজীবী মানুষকে নিশ্চিতভাইে পার করতে হয় অসহ্য যন্ত্রণা। নিত্যদিনের সঙ্গী যানজট আর যাত্রীপরিবহন ব্যবস্থার অভাবে অফিস যাওয়া-আসাতেই চার-পাঁচ ঘন্টা অপচয় হচ্ছে কর্মজীবীদের।
কর্মস্থলে যাওয়ার ক্ষেত্রে কর্মজীবী সাধারণ মানুষের প্রথম বাধা পরিবহন সংকট। মিরপুর ১ থেকে মতিঝিল যেতে দূরত্ব যেখানে ২০/২৫ মিনিটের পথ, সেখানে গাড়ি পেতেই যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে আধঘন্টার বেশি। আবার কখনো-কখনো ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও গাড়ির অপেক্ষায় লাইনেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয় কর্মজীবী মানুষদের।
অফিসগামী একজন জানান, আধ ঘণ্টা ধরে দাড়িয়ে থেকে বাস পেয়েছেন তিনি। নির্বিঘ্নে সময়মতো অফিসে যাওয়ার উপায় নেই। প্রতিদিন একই ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
আরেকজন বললেন ‘ জনপরিবহন সংকটে নগরবাসী অনেকটা জিম্মি হয়ে পড়েছে অনিয়মের বেড়াজালে।
বিকল্প পরিবহন ব্যবস্থা হিসেবে ছোট গাড়ি বা সিএনজি থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে বিপদে পড়ে বাধ্য না হলে সেগুলোতে চড়ার উপায় নেই।
নগরবাসী বলছেন রাস্তায় এখন স্বাচ্ছন্দে জনপরিবহনে চড়ার উপায় নেই। পরিবহন সংকটে সিএনজি চালিত অটোরিকশা নিতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকেই। তবে ভাড়া দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত।
বিরক্তিকর অপেক্ষার অবসান ঘটার পর গন্তব্যে রওয়ানা হওয়ার পর দ্বিতীয় বাধার নাম যানজট। মিরপুর টু মতিঝিলই হোক বা উত্তরা-আব্দুল্লাহপুর থেকেই হোক অফিসগামী কর্মজীবীদের গাড়িতেই পার হয়ে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা।
অতীতের কোনো পদক্ষেপেই সুফল না পাওয়ায় যানজট নিরসনে নেয়া বর্তমান পদক্ষেপগুলোর উপরও আস্থা রাখতে পারছেন না ভুক্তভোগী নাগরিকেরা।
এক অফিসগামী জানালেন, কয়েক মিনিটের দূরত্ব পাড় করতে তার বসে থাকতে হয়েছে প্রায় এক ঘণ্টা। আরেকজন বললেন ‘জ্যামের কারণে গাড়িতে বসে থাকতে থাকতে আমরা অতিষ্ঠ’! এক যাত্রী জানান, অচল দশায় প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ তিনি। কিন্তু কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেও লাভ নেই বলে আক্ষেপ করেন তিনি।
হতাশা- ক্ষোভকে নিত্যসঙ্গী করেই তাই অসহনীয় এই অচলাবস্থার মুখোমুখি হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
এক নারী যাত্রী বলেন, আমরা বড়জোর ক্ষোভ প্রকাশ করতেই পারি। কিন্তু এতে কোনো লাভ হয়না। নতুন মেয়ররা অনেক প্রতিশ্রুতি দিলেন কিন্তু নগরীর এই প্রধান দুর্ভোগ আগের মতোই থেকে গেলো।
যানজট নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি নিয়ে সন্দিহান হলেও নিরূপায় কর্মজীবী মানুষ দুর্ভোগ সঙ্গী করেই নির্বিঘ্নে চলাচলের ব্যবস্থার আশা নিয়েই তাকিয়ে আছেন সুদিনের আশায়।