খেলাপি ঋণের পরিমান কি বাড়তেই থাকবে? দেশের অধিকাংশ ব্যাংকই খেলাপি ঋণের সঠিক চিত্র প্রকাশ করে না। জিডিপিতেও খেলাপি ঋণের হার দেখানো কম দেখানো হয়। এমনকি খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার প্রকৃত কারণ স্পষ্ট না করে উল্টো ঋণের তথ্য গোপন করে ব্যাংকগুলো। খোদ ব্যাংকিং সম্মেলনেই জানানো হয়েছে এমন ভয়াবহ তথ্য। ব্যাংকিং খাতে জড়িত ব্যক্তিরাই এই বিষয়টিতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, খেলাপী ঋণের তথ্য গোপন করলে প্রতিষ্ঠানে সুশাসনের ঘাটতি দেখা দেয়, দুর্নীতি বেড়ে যায়। এর জন্য মূলত ব্যাংকগুলোই দায়ী। অধিকাংশ ব্যাংক খেলাপি ঋণের তথ্য গোপন করে থাকে। এছাড়া ব্যাংকগুলোর রিস্ক ম্যানেজম্যন্ট বিভাগের গবেষণা ভালো নয়। তারা যাচাই-বাছাই না করেই গ্রাহকদের ঋণ দেয়। এ কারণে সেসব ঋণ খেলাপি হয়ে পড়ে। তাই রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করা দরকার। বর্তমানে ব্যাংক খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। এই খেলাপি ঋণের মধ্যে প্রকৃত খেলাপি ঋণ হচ্ছে ৮০ হাজার কোটি টাকা। বাকি ৪৫ হাজার কোটি টাকা অবলোপন করা; যা পাওয়ার আশা নেই বললেই চলে। অর্থমন্ত্রীও খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার পেছনে ব্যাংকারদেরও দায়ী করেন। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ব্যাংকাররা ঋণ দেওয়ার পরের দিন থেকেই উদ্যোক্তাকে খেলাপি বানানোর চেষ্টা করে। উদ্যোক্তাকে কব্জায় আনতে ইচ্ছা করেই তাকে খেলাপি বানানো হয়। প্রকল্পে এমনভাবে ঋণ দেওয়া হয়, যাতে সে কোনোভাবেই সফল হতে না পারে। খেলাপি ঋণ বাড়ার এটিও একটি কারণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থঋণ ও দেউলিয়া আদালতের মাধ্যমে ঋণখেলাপিদের কোনো বিচার হচ্ছে না। এ কারণে ঋণখেলাপিরা সাহস পেয়ে যাচ্ছে। ঋণ খেলাপিদের বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন এখন সময়ের দাবি। অবলোপন করা ঋণের তথ্য গোপন করে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। এই ঋণও খেলাপি এবং সুদ আরোপ হচ্ছে। ঋণখেলাপি রাঘববোয়ালদের শাস্তি হলেই খেলাপি ঋণ কমে আসবে।