পবিত্র শবে বরাত মুসলিম উম্মাহর কাছে একটি মহিমান্বিত, তাৎপর্যমণ্ডিত ও ফজিলতপূর্ণ রাত। এ রাতে আল্লাহ তায়ালা পাপী লোকদের ক্ষমা করেন, নিষ্কৃতি দেন ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন।
পবিত্র কুরআনের সুরা দুখানের প্রথম পাঁচ আয়াতে এ রাতের বর্ণনা এসেছে। অনেকে এ আয়াতসমূহ দ্বারা শবে কদর উদ্দেশ্য করলেও কেউ শবে বরাতকে অস্বীকার করেননি। বরং তারাও আলাদা আলাদা ভাবে শবে বরাতের ফযিলত বর্ণনা করেছেন।
অনেক হাদিসের কিতাবে এ রাতের সমর্থনে হাদিস বর্ণিত রয়েছে। যেমন ‘সহীহ ইবনে হিব্বানে’ হযরত মু’আয ইবনে জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তায়ালা মধ্য শাবানের রাত্রে (শবে বরাতে) তার সৃষ্টির মধ্যে আবির্ভূত হন (রহমত নাযিল করেন)। অতঃপর মুশরিক বা হিংসুক ব্যতীত সমস্ত সৃষ্টিকে ক্ষমা করে দেন। অপর হাদিসে হযরত আবু বকর (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যখন অর্ধ শা’বান (শবে বরা’আত) আগমন করে, আল্লাহ তায়ালা (তার শান অনুযায়ী) দুনিয়ার নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করেন (রহমত, বরকত ও মাগফিরাত অবতরণ করে)। অতঃপর তিনি তার বান্দাদের ক্ষমা করে দেন। তবে মুশরিক এবং যে ব্যক্তি অপর ভাইয়ের প্রতি হিংসা রাখে, সে ব্যতীত’।(ইমাম বায়হাকী- শুয়াবুল ঈমান)।
দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যুগ যুগ ধরে যথাযথ মর্যাদায় এই পবিত্র রাতে ইবাদত করে আসছেন। দোয়া মাহফিল, দরুদ পাঠ ও নফল ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের আশায় সারারাত জেগে থাকেন তারা।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা বাণী দিয়েছেন। দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যাতে নিরাপদে এই রাতে ইবাদত করতে পারেন, সেজন্য যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া এই রাতে আতশবাজি, শোরগোল ও হৈ চৈ সহ নানা ধরণের ইসলামবিরোধী কাজ করার বিষয়েও নানা সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন। এইসব নিয়ম মেনে আমাদের আচরণ হোক সংযত ও শান্তিপূর্ণ।
ফজিলতময় এই রাত্রিতে ইবাদতের মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে নিজেদের জন্য, পরিবারের জন্য, সমাজের জন্য ও সর্বোপরি দেশের সার্বিক মঙ্গল কামনায় দেশের জনগণ দোয়া করবেন, এই আমাদের আশাবাদ। নিরাপদ হোক এই রাত্রি ও মানবজাতির জন্য শান্তি বয়ে আনুক পবিত্র শবে বরাত।